কীর্তিমান বাঙালি

সিদ্দিকা কবীর : একজন বাংলাদেশী পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ

সিদ্দিকা কবীর ছিলেন একজন বাংলাদেশী পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ। তিনি তাঁর লেখা রন্ধনবিষয়ক বইগুলির জন্য বিখ্যাত।

সিদ্দিকা কবীরের জন্ম ১৯৩৫ সালের ৭ মে এ, পুরনো ঢাকার মকিম বাজারে । তাঁর পিতা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা কলেচজয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। সিদ্দিকা কবীরের তাঁর মাতা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।

সিদ্দিকা কবীর পড়াশোনা করেন প্রথমে ইডেন কলেজে। সেখান থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হন ও সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্টের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৬৩ সালে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধপর্ব তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসাবে খণ্ডকালীন চাকরীতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করেন। এর পর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

১৯৬৫ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে “ঘরে বাইরে” নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন। সিদ্দিকা কবীর তাঁর “রান্না খাদ্য পুষ্টি” বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশের সময় মুক্তধারা, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা এটি প্রকাশ করতে রাজী হয় নাই। পরে এটি নিজ খরচে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পর এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি খাদ্য ব্যবস্থা, যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন, যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়। প্রাইভেট টেলিভিশন এনটিভিতে তিনি সিদ্দিকা কবীরস্ রেসিপি নামের রান্নার অনুষ্ঠান নির্মানে জড়িত ছিলেন।

অধ্যাপক সিদ্দিকা কবীর ৩১ জানুয়ারি ২০১২-তে রাজধানী ঢাকার স্কয়্যার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

ছবি ও তথ্য : সংগৃহীত

© 2012 – 2018, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button