মুক্তিযুদ্ধ

একাত্তরডা মনে পইরা যায়

‘২৫ মার্চ ১৯৭১। রাত বারটার দিকে ঢাকায় আর্মি নামে। তারা গণহত্যা চালায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন, জগন্নাথ হল ও ইপিআর ক্যাম্পে। লোকমুখে সে খবর ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। কয়েকদিনের মধ্যেই পাকিস্তানি সেনারা ক্যাম্প বসায় সারাদেশে। তাদের ভয়ে মানুষ পালাতে থাকে শহর থেকে গ্রামে এবং গ্রাম থেকে ভারতে। ফলে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে শরাণার্থী শিবির। আমাদের বাড়ি ছিল বর্ডার এলাকায়। বর্ডার পার হলেই ভারতের শিলং। সেখানে চেলা নামক স্থানে ছিল একটি শরণার্থী ক্যাম্প। অচেনা মানুষদের সীমান্ত পার হওয়া দেখতাম প্রায় প্রতিদিন। অনেক মুক্তিযোদ্ধারাও পার হয়েছেন আমাদের গ্রামের ওপর দিয়ে। পাশেই ছিল টেংরাটিলা। খানিকটা দেরিতে হলেও পাকিস্তানি আর্মিরা ক্যাম্প গাড়ে সেখানে। তারা প্রায়ই আশপাশের গ্রামে ঢুকে অত্যাচার চালাত। বাঙ্কার খোঁড়ার জন্য জোর করে ধরে আনতো গ্রামের নিরীহ মানুষদের। যারা যেতে চাইতো না তাদেরই বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিত।

এপ্রিলের শেষের দিকের কথা। দোয়ারা বাজার উপজেলার ভেতরে ছিল নইনগাঁ নামের একটি গ্রাম। একবার পাকিস্তানি আর্মিরা ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়ার পথে লঞ্চ ভেরায় ওইগ্রামে। দিনটি ছিল শুক্রবার। সবাই জুম্মার নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছে। সে সময় পাকিস্তানি সেনারা মসজিদ থেকে ধরে আনে সাতাশ জন মুসল্লিকে। মসজিদের পাশে লাইন করে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারে। অথচ তাদের কোনোই অপরাধ ছিল না। লোকমুখে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। গ্রামে থাকলে পাকিস্তানিদের গুলি খেয়ে মরতে হবে। মরলে তো এমনিই মরমু তাইলে যুদ্ধ কইরাই মরি। এমন চিন্তা আসতেই জোটবাঁধি খালাতো ভাই মিরাস আলীর সঙ্গে। পরিকল্পনা চলে কয়েকদিন। অতঃপর এক সন্ধ্যায় কাউকে কিছু না বলে সীমান্ত পার হয়ে চলে আসি ভারতে। প্রথমে নাম লিখাই ইছামতি ইয়ুথ ক্যাম্পে। সেখানে লেফট-রাইট চলে ২১দিন। এরপর আমাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মেঘালয়ে। সেখানেও চলে ২১দিনের ট্রেনিং। পরে আমরা আসি মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে, ইকো-১ ক্যাম্পে। ভারতীয় শিকরা আমাদের ট্রেনিং দেয় ২১দিন। রাইফেল, এসএলআর, এলএমজি ও গ্রেনেড টেনিং হয় সেখানে। শপথ হয় ওই ক্যাম্পেই। আতাউল গনি ওসমানী এসেছিলেন তখন। পরে শিলং থেকে অস্ত্র দিয়ে আমাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৫নং সেক্টরের সাব সেক্টর হেডকোয়াটার্স ভোলাগঞ্জে। আমাদের কমান্ড করতেন মেজর নুরুন নবী।

অক্টোবরের শেষের দিকে আমরা ফিল্ডে আসি। আমাদের ছিল গেরিলা টেনিং। নদী আর জঙ্গলে থাকতাম। থাকার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা ছিল না। অর্ডার আসলেই আমরা ওই জায়গায় গিয়ে অপারেশন করেই সরে পড়তাম। সাধারণ মানুষ সাহায্য না করলে যুদ্ধে জয়ী হতে পারতাম না। আমাদের ওখানে নদী ও জঙ্গলে ছিল বেশি। তাই থাকা ও খাওয়ায় অনেক কষ্ট করতে হতো। কিন্তু সেদিকে কোনো খেয়াল ছিল না আমাদের। চিন্তা ছিল শুধুই দেশ স্বাধীনের। এভাবে আমরা যুদ্ধ করি ছাতকের চাডিবর, লামনি গাঁও, চাহমারা, দলের গাঁও প্রভৃতি এলাকায়।’—

মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনার কথা শুনছিলাম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. মান্নান আলীর মুখে। তার পিতা করম আলী কৃষি কাজ করতেন আর মা গেদু বেগম ছিলেন সাধারণ গৃহিণী। গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার রহিসপুর গ্রামে। দুই ভাই ও দুই বোনের সংসারে মান্নান ছিলেন দ্বিতীয়। লেখাপড়া করেছেন বাড়ির পাশের বিরিশিং প্রাইমারি স্কুলে। তার বয়স যখন পাঁচ তখন তার বাবা মারা যান। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বন্ধ হয়ে যায় তার লেখাপড়া। ফলে ক্লাস থ্রির পরেই তিনি যুক্ত হন কৃষি পেশায়।

ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মান্নান বলেন, ‘আমার বয়স তখন ১৩-১৪। রজব আলী নামে মোসেরগাঁ গ্রামে ছিলেন আমার এক চাচাতো ভাই। বন্ধু সমসু মিয়া, ফরিদ মিয়া, কদরিস, আবুল কালামসহ আমরা তার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম। যাত্রাগান করতাম। রুববানের গানের একটি দল ছিল আমাদের। ওই দলে আমরা পালাগান ও রুববানের গান করতাম। তখন অনেক জনপ্রিয় ছিল এটি। সারারাত ধরে চলত এই গান। শীতের সময় গ্রামে গ্রামে চলতো এর আয়োজন। আমরা টেবলাই ও মোহাম্মদপুরের বাজার এলাকায় গান করতাম।’

দেশের অবস্থা তখন কেমন ছিল? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামের ছেলে। কোনো রাজনীতি করতাম না। বাজারে বসে বড়দের মুখে শুনতাম বঙ্গবন্ধুর কথা। তখন তার কথা সবার মুখে মুখে। তার ছয় দফা নিয়ে নেতারা গ্রামে ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে কথা বলতেন। একাত্তরের সাত মার্চ। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেন রেসকোর্স ময়দানে। গ্রামের এক বাড়িতে ছিল একটি রেডিও। ভাষণ শুনতে তখন তার বাড়িতেই ভিড় জমাই আমরা। সবার মাঝে সে কি উত্তেজনা! বঙ্গবন্ধু বললেন— আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমি এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিতে চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাছারি, আদালত-ফৌজদারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে…। আজও ভাষণটা শুনলে ঠিক থাকতে পারি না।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় এক সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের পুতে রাখা মাইনের আঘাতে উড়ে যায় মান্নানের ডান পায়ের কিছু অংশ। এছাড়া তার সারাশরীরে বিদ্ধ হয় স্পিন্টার। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম পায়ে চলফেরা করেন। কী ঘটেছিল ওইদিন? রক্তাক্ত সেই অপারেশনটির কথা আমরা শুনি মুক্তিযোদ্ধা মান্নানের জবানিতে। তার ভাষায়, ‘৭ ডিসেম্বর ১৯৭১। আমাদের পুরো কোম্পানি ছিল চাটিবর ক্যাম্পে। মেজর নুরুন নবী কমান্ডে। মাইল তিনেক সামনেই সুরমা নদী। বিকেল ৩টায় আমরা ক্যাম্প থেকে বেরোই। পরিকল্পনা হয় সুরমা পার হয়ে ছাতক থানা কেপচারের। আমরা জয়বাংলা  স্লোগান দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে আগাই। আমার পাশেই ছিল মিরাস আলী ও সিফাত আলী। পাকিস্তানি সেনারা  তখন আমাদের ওপর আর্টিলারি মারে। আমরা তবুও পিছু হঁটি না। নদীপাড়ে গিয়ে নৌকা নিয়ে অনেকেই ওপার যাওয়ার চেষ্টা করে। আমিও নিচু হয়ে দৌড় দিয়ে নদীপাড়ে আসি। দৌড়ে একটি নৌকায় উঠবো ঠিক তখনই বিকট শব্দ হয়। আমি ছিটকে পড়ি। নদী তীরের বালির নিচে পাকিস্তানি সেনারা পুঁতে রেখেছিল মাইন। সে মাইনে পা পড়তেই বিস্ফোরিত হয়। কিছু বোঝার আগেই আমার চোখ পড়ে ডান পায়ের দিকে। দেখলাম ডান পায়ের পাতাসহ গোড়ালি উড়ে গেছে। অল্প সময় পরই আমি জ্ঞান হারাই।
আমি উইন্ডেট হলেও সেদিনই আমরা ছাতক থানা দখলে নিয়েছিলাম। আমাদের ভোলাগঞ্জ হেডকোয়ার্টার ছিল বেশ দূরে। সহযোদ্ধারা আমাকে তুলে পরদিন ভোর ৪টায় পৌঁছে দেয় সেখানে। দুই দিন জ্ঞান ছিল না। যখন চোখ মেলি তখন আমি শিলং হাসপাতালে। ১ মাস থাকার পর গোহাটি এবং পরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পুনা হাসপাতালে। শিলং হাসপাতালে একবার এবং পুনায় অপারেশন হয় আরও দুইবার। আমার শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ছিল স্পিন্টার। হাতের তালুতে ছোট্ট এক টুকরো স্পিন্টার এখনো আছে। দেশ যখন স্বাধীন হয় তখন আমি শিলং হাসপাতালে। আমার সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। কিন্তু তবুও তখন আনন্দ হচ্ছিল। মনে হয়েছে উড়াল দিয়ে স্বাধীন দেশে চলে আসি।’

কথা ওঠে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের কার্যক্রম নিয়ে। তিনি বললেন নিজের প্রত্যক্ষ একটি অভিজ্ঞতার কথা।

‘আমাদের পাশেই ছিল বিরিশিং গ্রামটি। একাত্তরে ওই গ্রামের আলাউদ্দিন ছিল রাজাকার বাহিনীতে। আমি যখন মুক্তিযুদ্ধে যাই তখন এ খবর সে পৌঁছে দেয় পাকিস্তানি আর্মিদের ক্যাম্পে। কয়েকদিন পর তাদের চিনিয়ে দেয় আমাদের বাড়িটিও। কোন গ্রাম থেকে কয়জন মুক্তিবাহিনীতে গেছে— এ লিস্ট তৈরি করতো রাজাকার ও শান্তিকমিটির লোকেরা। একরাতে পাকিস্তানি সেনারা আমাদের বাড়িতে হানা দেয়। তার আগেই পরিবারের সবাই পালিয়ে যায় বর্ডার সাইডে। আলাউদ্দিন এখনো বেঁচে আছে। সে যে রাজাকার ছিল— এ বিষয়ে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শী ৬০-৭০জন সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু তবুও বেয়াল্লিশ বছরেও তার কোনো বিচার করা যায়নি। বরং দুঃখ হয়, সে এখন সার্টিফিকেটধারী  মুক্তিযোদ্ধা। যুক্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে।’

আমাদের কথোপকথন হয় মুক্তিযুদ্ধের পরের কিছু বিষয় নিয়ে। মুক্তিযোদ্ধা মান্নান মনে করেন স্বাধীনের পরই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা উচিত ছিল। তখন সহজেই এ তালিকা চূড়ান্ত করা যেত। এছাড়া ভারতেও ছিল ট্রেনিং প্রাপ্তদের তালিকা। যেটি পরবর্তীতে সংগ্রহ করে আনেন বিগ্রেডিয়ার আমিন চৌধুরী।

বেয়াল্লিশ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘একেক সরকার আসলেই তালিকা বেড়ে যায়। এটা রাজনৈতিক কারণ। এছাড়া টাকার বিনিময়ে থানা কমান্ডার বা অন্য মুক্তিযোদ্ধারা আরেকজনকে সার্টিফিকেটের জন্য সুপারিশ করছে। এভাবে বেড়ে যাচ্ছে  মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা। এখন তো অমুক্তিযোদ্ধা ও কিছু রাজাকারের নামও ঢুকে গেছে এ তালিকায়। আমি অঙ্গ দিয়েছি দেশের জন্য আবার যুদ্ধ না করেও আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া সত্যি কষ্টকর। এ তালিকা যত বাড়বে আমাদের কষ্টও তত বেড়ে যাবে।’

কথা ওঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সময় পাইলেই এদের বিচার করতেন। এখন করছেন তার মেয়ে। এরা এতোটাই শক্তিশালী হয়েছিল যে, ভাবিনি এদের বিচার করা যাবে। যদি রাজাকারদের সবার শাস্তি দেইখা মরতে পারি তাইলে আমার আত্মাডা শান্তি পাইতো। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ধন্য মনে করতাম।’

স্বাধীনের পর রাজাকাররা শক্তিশালী হলো কিভাবে? মুক্তিযোদ্ধা মান্নানের উত্তর, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ক্ষমতায় আসেন জিয়া। তিনি দালাল আইন বাতিল করেন। রাজাকারদের বিচার না করে তিনিই তাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করার পথ তৈরি করে দেন। স্বাধীন দেশের পাতাকা থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে, জিয়া ও তার দল তা তুলে দেয় স্বাধীনতা বিরোধী ও রাজাকারদের হাতে। জিয়া নিজেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তিনি রাজাকারদের সাথে হাত মেলান। ফলে বেয়াল্লিশ বছরে রাজাকাররা অর্থ, বিত্ত ও ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু তাদের চরিত্রের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। ধর্মকে তারা রাজনীতিতে ঢুকিয়েছে। এ কারণেই আমরা এতটাই পিছিয়ে গেছি।’

বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্ষমা করাটা ঠিক হয়নি। সবারই বিচারই হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তো বড় বড় যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করেননি। সে সময় ওদের তালিকা ছিল বলেই সে মতে আজ তাদের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে।’

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভালো লাগা অনুভূতির কথা জানতে চাই আমরা। উত্তরে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘দেশের উন্নতি দেখলে, উন্নয়নমূলক কাজ দেখলে ভালো লাগে। আমি প্রতিষ্ঠিত হই বা না হই, আমার দেশ তো প্রতিষ্ঠিত হইতেছে। এটাই বড় পাওয়া। সবচেয়ে ভালো লাগে ২৬ মার্চ আর ১৬ ডিসেম্বর আসলে। তখন একাত্তরডা মনে পইরা যায়।

খারাপ লাগে কখন? প্রশ্ন শুনে মুক্তিযোদ্ধা মান্নান খানিকটা নীরব থাকেন। অতঃপর উত্তরে বলেন, ‘যখন দেশের রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রী ছিল রাজাকার। তাদের গাড়িতে উড়েছে স্বাধীন দেশের লাল-সবুজ পতাকা— ওই দৃশ্য দেখলেই তখন মন চাইত নিজের জানডা নিজেই দেলাইতাম।’

কি করলে এ দেশ আরও উন্নত হবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেশপ্রেম খুবই কম। পাশের দেশ ভারতেও দেশের স্বার্থে সকল দল একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু লজ্জার বিষয়, বিদেশীরা আসলেই শুধু আমাদের নেতারা একত্রে বসে দেশের কথা বলে। সকল দল থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বের করে দিয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করলে, দেশের চেহারা সত্যি বদলে যাবে। একই সঙ্গে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও।’

কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান? চোখেমুখে আলো ছড়িয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখতে চাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। যদি স্বার্থের রাজনীতি ছেড়ে সবাই মিলে দেশের চিন্তা করি, তবে একদিন অবশ্যই সোনার বাংলা হবে। কেননা এই দেশটা সত্যি সোনার দেশ।’

নতুন প্রজন্মের হাত ধরেই একদিন এ দেশটা সোনার বাংলা হবে। এমনটাই বিশ্বাস করেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মান্নান আলী। তাই তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরা লেখাপড়া শিখে নিজেকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলো। দেশের প্রশ্নে সবাই এক থেকো। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে, তাদের কাছ থেকে সব সময় দূরে থেকো।’

লিখাটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলানিউজ২৪.কম এর স্বাধীনতার বিশেষ আয়োজনে,  প্রকাশকাল: মার্চ ২৫, ২০১৪

© 2014 – 2021, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button