মুক্তিযুদ্ধ

বাবার দেওয়া জীবন নিয়েই বেঁচে আছি

৭১-এর শহীদ স্মৃতি:০২

একেকজন মুক্তিযোদ্ধার জীবনের গদ্যই মুক্তিযুদ্ধের একেকটি ইতিহাস। কিছু ইতিহাস আমাদের কাছে জীবন্ত হয়ে থাকলেও অনেক ইতিহাস এখনও রয়েছে অন্তরালে, বিস্মৃত হয়ে। যা তুলে আনার দায় আমাদের ওপরই বর্তায়। একাত্তরের তেমনি একটি বিস্মৃতি ইতিহাস জানতে নৌ-কমান্ডো মো. শাহজাহান কবিরের মুখোমুখি হই। একাত্তরে দশ নম্বর সেক্টরের অধীন অপারেশন জ্যাকপটসহ চাঁদপুরে বিভিন্ন নৌ অপারেশনে অংশ নেন তিনি। সাহসিকতার জন্য পেয়েছেন বীরপ্রতীক খেতাব। মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্বের ইতিহাস জীবন্ত হয়ে থাকলেও উঠে আসেনি তার বাবার আত্মত্যাগের ইতিহাসটি। বিস্মৃত সেই ইতিহাসটিই জানব আমরা।

তার আগে নৌ-কমান্ডো মো. শাহজাহান কবিরের কাছ থেকে জেনে নিই চাঁদপুরে অপারেশন জ্যাকপট অ্যাটাকটি কিভাবে হয়েছিল সে ইতিহাস।

চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ (দাউদকান্দি ফেরিঘাটসহ) নদীবন্দরে একই দিন একই সময়ে অপারেশন চালাতে হবে। এটিই ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’। এই অপারেশনে চট্টগ্রামের জন্য ৬০ জন, মংলার জন্য ৬০ জন, চাঁদপুরের জন্য ২০ জন ও নারায়ণঞ্জের জন্য ২০ জন নৌ-কমান্ডোর গ্রুপ তৈরি করা হয়। ফ্রান্সফেরত সাবমেরিনার এ ডাব্লিউ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরীকে (বীরউত্তম ও বীরবিক্রম) চট্টগ্রাম, আহসান উল্লাহকে (বীরবিক্রম) মংলায়, বদিউল আলমকে (বীরউত্তম) চাঁদপুর এবং আবেদুর রহমানকে নারায়ণগঞ্জ অপারেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। শাহজাহান কবিরকে তার ছোটভাই শামসুলসহ রাখা হয় চাঁদপুরের গ্রুপে।

৯ আগস্ট ১৯৭১। ট্রেনিং শেষে ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ—এই তিনটি গ্রুপকে সামরিক বিমানে আনা হয় আগরতলায়, শালবনের ভেতর নিউ ট্র্যানজিট ক্যাম্পে। ওখান থেকে বাংলাদেশে ঢুকে অপারেশন সেরে ওখানেই ফিরতে হবে। একদিন পরই দেওয়া হয় আর্মস অ্যামুনেশন— প্রত্যেকের জন্য একটা লিমপেড মাইন, একটা কমান্ডো নাইফ, একজোড়া ফিনস, থ্রি নট থ্রিসহ কিছু অস্ত্র এবং প্রত্যেক গ্রুপের জন্য একটা টু ব্যান্ডের রেডিও।

রেডিও কেন? বলা হলো ওই রেডিওর মাধ্যমেই সিগন্যাল পাঠানো হবে। কুমিল্লার ময়নামতি হয়ে তারা চাঁদপুর আসেন ১১ আগস্টে। প্রথমে উঠেন নিজ বাড়ি চাঁদপুরের দাশাদি গ্রামে, মেঘনা নদীর পাড়ে। কিন্তু যেতে হবে চাঁদপুরের দক্ষিণে, ডাকাতিয়া নদীর কাছাকাছি। ওই দিকটাতেই থাকে অধিকাংশ লঞ্চ ও স্টিমারগুলো। করিম খাঁ নামে শাহজাহান কবিরের এক মামার বাড়ি ছিল রঘুনাথপুরে। শাহজাহানের বাবার পরামর্শে পরদিন ইলিশ ধরার তিনটি নৌকায় ওখানে গিয়ে উঠেন তারা। অতঃপর রেডিওতে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকেন।

নৌ-কমান্ডোদের বলা ছিল—‘‘প্রত্যেকদিন তোমরা আকাশবাণী বেতার কেন্দ্র ধইরা রাখবা। ওটার মাধ্যমে সিগন্যাল পাবা।’’ কেমন সিগন্যাল? আকাশবাণীতে সকাল ৭ বা সাড়ে সাতটায় বাজবে একটি গান—‘‘আমি তোমায় শুনিয়েছিলাম যত গান।’’ এ গান হলেই অপারেশনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। ২৪ ঘণ্টা পর আরেকটা গান বাজবে— ‘‘আমার পুতুল আজকে যাবে শ্বশুর বাড়ি।’’ এই গানটি হলেই বুঝতে হবে চূড়ান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এবং ওই দিন শেষে রাত বারোটার পর অবশ্যই অ্যাটাক করতে হবে।

রাত ১৩ আগস্ট সকালে বাজল প্রথম গানটি। ২৪ ঘণ্টা পর অর্থাৎ ১৪ অগাস্ট চূড়ান্ত নির্দেশনার গানটি বাজার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন সেটি না বেজে বাজল ১৫ অগাস্ট সকালে। রাত বারোটার আগেই তারা অ্যাটাকের প্রস্তুতি নেন। সফলভাবে লন্ডনঘাট জেটিসহ কয়েকটি জাহাজে মাইন ফিট করে দেন। প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট পর লন্ডনঘাটসহ জাহাজে লাগনো মাইনগুলো বিস্ফোরিত হতে থাকে। বিস্ফোরণের আগুন দেখেই পাকিস্তানি সেনারা দিশেহারা হয়ে গানবোট নিয়ে চারপাশে টহল দেয়। ফলে জীবন বাঁচাতে শাহজাহানরা যে যার মতো সরে পড়েন। একটি নৌকায় তিনি চলে যান নিজ বাড়ি দাশাদিতে। কিন্তু এর কয়েকদিন পরই বাবাসহ তাকে তুলে নেয় পাকিস্তানি সেনারা।

এরপর কী ঘটল? বীরপ্রতীক শাহজাহান কবির সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে প্রথমেই স্মৃতিচারণ করেন তার বাবা মো. ইব্রাহীমের। তিনি বললেন যেভাবে, ‘‘আমার বাবা কলকাতার আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি নেন। এরপর দেশে ফিরে প্রথম ভোলায় এডুকেশন ডির্পাটমেন্টে অফিসার হিসেবে চাকরি পান। কিন্তু ওই চাকরি তার ভালো লাগে না। আট মাস পর ‘বিএবিটি’ (এখন যেটা ‘বিএড’) ট্রেনিং নিয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন, ঢাকার সেন্ট গ্রেগোরি স্কুলে। সেখানে দশ বছরের শিক্ষকতা জীবনে পাঁচ বছরই তিনি বেস্ট টিচার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।

ওইসময় আমার মায়ের দাদা পগারি খাঁ চাঁদপুরে একটি জুনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। কয়েকবছর পর সেটাকে হাই মাদ্রাসা করা হয়। তখন পারিবারিকভাবে বাবাকে প্রায় জোর করেই ওই মাদ্রাসার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৬২ সালে সেই মাদ্রাসাই রূপান্তরিত হয় সফরমালি হাই স্কুলে। ওই স্কুলেরই তিনি হেড মাস্টার ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। দশ গ্রামের ভেতর তিনিই ছিলেন একমাত্র ‘বিএবিটি’ পাশ। তাই চাঁদপুরের সবার কাছে তিনি ‘বিটি’ সাহেব নামে অধিক পরিচিত ছিলেন।’’

চাঁদপুরের শহীদ ইব্রাহীম বিএবিটি (যিনি বিটি সাহেব নামে অধিক পরিচিত ছিলেন), ছবি: পারিবারিক সংগ্রহ

মুক্তিযুদ্ধে বাবার অবদানের কথাও তুলে ধরেন শাহজাহান কবির। তার ভাষায়, ‘‘তিনি ছিলেন স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ। একাত্তরে স্কুল খোলা রাখার পাকিস্তান সরকারের নির্দেশ অমান্য করে তিনি সফরমালি স্কুল বন্ধ রেখেছিলেন। চাঁদপুর মহকুমার সংগ্রাম কমিটির সদস্যও ছিলেন। একাত্তরে তার কাজ ছিল ছাত্র ও যুবকদের ইন্ডিয়াতে ট্রেনিংয়ে পাঠানো। জুন ও জুলাইয়ের দিকে ট্রেনিং করতে গেলে স্থানীয় সংগ্রাম কমিটির চিঠি লাগত। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাই ট্রেনিংয়ে যাচ্ছে নাকি ট্রেনিং ক্যাম্পের খবর নিতে পাকিস্তানি সেনাদের অনুচর যাচ্ছে এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই এমনটা করা হয়েছিল। ওই সময় বাবা যুবক ও ছাত্রদের চিঠি লিখে এবং প্রয়োজনে টাকা পয়সা সংগ্রহ করে দিয়ে ট্রেনিংয়ে পাঠাতেন। এটাই ছিল তার মুক্তিযুদ্ধ। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন চাঁদপুর আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও।’’

৮ এপ্রিল ১৯৭১। পাকিস্তানি সেনারা চাঁদপুর শহর দখলে নেয়। এরপরই তারা আশপাশের গ্রামে হানা দিতে থাকে। তাদের সহযোগিতায় দলবলসহ এগিয়ে আসে মুসলিম লীগের সালাম মোক্তার। শাহজাহানের মতো যুবকেরা তখন পালিয়ে বেড়ায়। এক সময় নুরুল্লাহ পাটওয়ারি, সালাউদ্দিন, জহিরুল হক, আবুল হোসেন, রাজ্জাকসহ ১৪ জন একত্রিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

যুদ্ধে যাওয়ার কথা শুনে মা আসিয়া বেগম রাজি হন না, বাঁধা দেন তিনি। কিন্তু সাহস দিতে এগিয়ে আসেন শাহজাহানের বাবা। বলেন—‘‘ওরা না গেলে দেশ স্বাধীন করবে কারা? দুলুকেও (ছোটভাই শামসুল কবির দুলু) সঙ্গে নিয়া যা।’’

ট্রেনিং শেষে চাঁদপুরে ঢুকেই শাহজাহান কবির পুরো টিম নিয়ে তার বাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকেই চাঁদপুর নদীবন্দরে অপারেশন করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

তিনি বলেন, “চাঁদপুর অপারেশন করব বাড়ি থেকেই। ওটাই ছিল মূল পরিকল্পনা। পরে বাবার পরামর্শেই সেটি হয়নি। বিশজন লোক আমরা। তিনি সবার খাবারের ব্যবস্থা করছেন তখন। আমাকে পাশের রুমে ডেকে নিয়ে বলেন, ‘‘দেখ, আমি মনে হয় বেশিদিন বাঁচমু না। তুই তোর ভাইবোনদের দেখে রাখিস। আর একটা অনুরোধ, পারলে মানুষের উপকার করিস। তোর দ্বারা যেন কোনও মানুষের অপকার না হয়।

আমি বললাম, ‘‘হঠাৎ কেন এমন কথা বলছেন।’’ ‘‘তিনি কিছু বললেন না। ১১ অগাস্ট এ কথা হয়, ১৭ আগস্টেই শহীদ হন। হয়তো মৃত্যুটা তিনি আগেই অনুভব করেছিলেন। এখনও বাবার কথাগুলো কানে বাজে।”

কিভাবে তিনি শহীদ হন? শাহজাহান কবির বললেন, “যেহেতু জ্যাকপট অপারেশনের আগে আমরা প্রথম উঠেছিলাম বাড়িতে। এ খবর রাজাকারদের মাধ্যমে পেয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা। ওরা জানত আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। তাই ওরা নৌ-কমান্ডোদের খুঁজতে বাড়ি অ্যাটাক করে।

১৭ অগাস্ট ১৯৭১, সকালবেলা। গোপনে চার পাঁচটা নৌকায় বাড়ির চারপাশ ঘেরাও দেয়। অতঃপর ব্রাশ ফায়ার করতে থাকে। সেনাদের সঙ্গে ছিল রাজাকাররা। ওরা আমার সঙ্গে বাবাকেও বেঁধে পিটাতে থাকে। বুটের লাথিতে যন্ত্রণায় তিনি বাঁকা হয়ে যান। তা দেখে ছটফট করি। বাবাকে ওরা জিজ্ঞেস করে, ‘নৌ-কমান্ডোরা কোথায়?’

মার খেয়েও তিনি মুখ খোলেন না। বলেন, ‘এখানে কেউ আসে নাই।’ বাড়ি সার্চ করে ওরা কোনও অস্ত্র পায় না। ফলে আমাদের বেঁধে নৌকায় তুলে পিটাতে থাকে।

৪-৫শ গজ দূরে ছিল কামেলি লজ সাহেবের বাড়ি। ওই বাড়ি লুট করতে নামে ওরা। আমার হাত ও পা বাঁধা। নৌকায় বাবাকে পাশেই ফেলে রাখছে। ব্যথায় উনি গোঙ্গাচ্ছেন। জুটমিলের লেবার সর্দার ছিল বাচ্চু রাজাকার। সেও নৌকায়। বুড়ো মানুষ দেখে আরেক রাজাকারের দয়া হয়। সে বাবার হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। পাকিস্তানিদের বুটের আঘাতে তার সারা শরীর ফুলে গিয়েছিল। আমি তখন আল্লাহকে ডাকছি আর সুযোগ খুঁজছি।

কামেলি লজের বাড়িতে কেউ নেই। বাড়ির পাশের পাটখেতে লুকিয়ে ছিল তার মেয়ে ঝর্ণা। সঙ্গে সোনা ও টাকার আট নয়টা ট্রাংক। কীভাবে যেন ওরা টের পেয়ে যায়। পাটখেত থেকে ধরে এনে তারা তাকে নৌকায় তোলে। তখন পাকসেনাদের কুদৃষ্টি পড়ে মেয়েটির দিকে। রাজাকাররাও ব্যস্ত থাকে ট্রাংকের টাকা ও সোনা-রূপা আনলোড করায়।

এ সুযোগে বাবা কানে কানে বলেন, ‘তুই এখান থেকে পালা।’ বলি, ‘আপনার অবস্থা কি হবে?’ বলেন, ‘আমার চিন্তা করিস না। তোকে ধরে নিয়ে গেলে যদি জানে তুই নৌ-কমান্ডো তাহলে মেরে ফেলবে। পুরো গ্রুপটাই ধরা পড়ে যাবে। তোদেরকে দেশটা স্বাধীন করতে হবে। তুই পালা।’ এটা বলেই কৌশলে আমার হাত ও পায়ের বাঁধনও খুলে দেন। বাবার সাথে ওইটা শেষ স্মৃতি।

অস্ত্র হাতে নৌকার দুই পাশে দুজন দাঁড়ানো। এক সাইডে একটারে পা ধরে পানিতে ফেলে দিই। এরপরই আমি ঝাঁপ দিই। আমার দিকে ওরা ব্রাশ ফায়ার করে। কিন্তু তার আগেই ডুব দিয়ে অনেক দূরে চলে যাই।

বাবার জন্য খুব চিন্তা হচ্ছিল। কী করব ভাবছি। ওরা বাবাকে ভীষণ টর্চার করে। এরপর কানে আসে কয়েকটি গুলির শব্দ। বুকের ভেতরটা তখন খামচে ধরে। তাকে গুলি করে ওরা ওই বাড়ির পাশে অর্ধেক পানিতে ও অর্ধেক রাস্তায় ফেলে যায়। গ্রামবাসী পরে লাশ উদ্ধার করে। ১৮ আগস্ট বিকেলে বাবাকে দাফন করা হয় পারিবারিক গোরস্তানে। তার আগেই নারী সেজে, বোরখা পড়ে আমি লাশটা দেখে আসি।

আমার জন্যই বাবা শহীদ হয়েছেন। বেদনায় চোখ ভিজে যায়। চিৎকার করে কাঁদতেও পারি না। ছেলেকে বাঁচানোর অপরাধে শহীদ হয়েছেন আমার বাবা। পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারেরা তাকে গুলি করে মারে। বাবার দেওয়া জীবন নিয়েই বেঁচে আছি ভাই।’’

‘‘একাত্তরে এমন হাজারো পিতা শহীদ হয়েছেন। স্বাধীনতার এত বছর পর আমরা কি মনে রেখেছি তাদের? রাষ্ট্র কি একাত্তরের শহীদদের তালিকা করেছে? তুলে ধরেছে কি তাঁদের আত্মত্যাগের ইতিহাস?”

প্রশ্নগুলো তুলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই বীরপ্রতীক। আমরা তখন নীরব হয়ে যাই।

তিনি আরও বলেন, ‘‘একাত্তরে মরতে গিয়েও জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি। আমরা তো ইতিহাস বলার সুযোগ পাচ্ছি। কিন্তু দেশের জন্য যারা জীবন দিল, রক্ত দিল স্বাধীনতার জন্য— তাদের কথা লিখবে কে? ‘

১৯৭২ সনে বঙ্গবন্ধু শহীদ ইব্রাহীম বিএবিটির পরিবারকে একটি চিঠিসহ দুই হাজার টাকার চেক পাঠান। পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী চাঁদপুর এসে ষোলঘর ডিসি অফিস থেকে বিষ্ণপুর পর্যন্ত রাস্তাটিকে ‘বিটি রোড’ হিসেবে নামকরণ করে উদ্বোধন করেন। কিন্তু এখন ওই রাস্তার নাম কেন বিটি রোড? এ প্রজন্মের কেউ-ই তা জানে না। সে ইতিহাসও তুলে ধরা হয়নি কোথাও।

ফলে শহীদ ইব্রাহীম বিএবিটির আত্মত্যাগের ইতিহাসও আজ প্রায় বিস্মৃত। অথচ এ দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, তারা সবাই এ জাতির সূর্যসন্তান। তাদের অসীম আত্মত্যাগ বাঙালির চিরকালের প্রেরণা।

লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে সকাল-সন্ধ্যা ডটকমে, প্রকাশকাল: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

© 2024, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button