আদিবাসী

বাংলার আধিপত্যে কি হারিয়ে যাবে আদিবাসী ভাষা

আমরা সেই জাতি, যারা মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছি। বাঙালি জাতির সেই ইতিহাস আজ গোটা বিশ্বের জানা। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের ২৩ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারা পৃথিবীতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে আমাদের রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আমাদের ‘শহীদ দিবস’ আজ সারা বিশ্বের ‘মাতৃভাষা দিবস’। কিন্তু ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া শহীদদের এদেশে রক্ষা পাচ্ছে কি অন্য জাতির মাতৃভাষাগুলো? অন্য জাতির শিশুরা কি পড়ছে তাদের মায়ের ভাষায়? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এই লেখার অবতারণা।

বাংলাদেশে আদিবাসী ভাষাগুলোর মধ্যে প্রায় ১৪টি ভাষাই বিলুপ্তির পথে। বান্দরবানে বসবাসরত ম্রো আদিবাসীদের মধ্যে মাত্র দুই নারী ও চারজন পুরুষ ‘রেংমিটচা’ ভাষায় কথা বলেন। তাদের মৃত্যুর পর এ ভাষাটি যেন হারিয়ে না যায় সে কারণে গতবছর রেংমিটচা ভাষার একটি ‘শব্দের বই’ প্রকাশ করেছেন ম্রো-ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াংঙান ম্রো। কিন্তু এই ভাষাটি রক্ষায় কোনও সরকারি উদ্যোগের খবর আমরা পাইনি।

বাংলা ভাষার নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা যায় বাংলার অন্যান্য আদিবাসীদের ভাষা থেকে বহু শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বাংলাভাষায়। সাঁওতালি ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ রয়েছে। পণ্ডিতেরা মনে করেন, সাঁওতালি ভাষা বাংলা ভাষার ব্যাকরণে প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত দেশি শব্দগুলোল অনেকই প্রধানত সাঁওতালি ও মুণ্ডা ভাষা থেকে আগত। অথচ আজ হারিয়ে যাচ্ছে আদিবাসী জাতির সে ভাষাগুলোও। এরই মধ্যে কোচ ও রাজবংশীদের ভাষা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। প্রায় পুরো বিলুপ্ত হয়ে গেছে আদিবাসীদের ‘কুড়ুখ’ ও ‘নাগরি’ ভাষা।

আসলে ভাষা যেমন একটি সতত প্রবহমান বিষয় তেমনি একই অঞ্চলের নানান গোষ্ঠীগুলোও পরষ্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। বাংলাদেশের আদিবাসীদের অনেক ভাষাও তেমনি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। এদের মধ্যে কয়েকটি ভাষা পরস্পর এতটা ঘনিষ্ঠ যে এগুলোকে ‘উপ-ভাষিক’ বৈচিত্র্য বলা যায়। যেমন ‘তঞ্চঙ্গা’ মূলত ‘চাকমা’ ভাষারই অংশ, ‘রাখাইন’ মারমা ভাষার, ‘লালং’ বা ‘পাত্র’ গারো ভাষার এবং ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’ মণিপুরী ভাষার এবং ‘হাজং’ ভাষাকে বাংলা ভাষার উপভাষা হিসেবে অবিহিত করা যায়।

বাংলাদেশে অস্ট্রো-এশিয়াটিক, তিব্বতি-চীন, দ্রাবিড় ও ইন্দো-ইউরোপীয় সব ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাই রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষাসমূহ দুটি শাখায় বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে মোন-খমের ও মুণ্ডারি শাখা। বাংলাদেশে এই শাখার ভাষার মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাসি ভাষা। এ ভাষার কোনও বর্ণমালা নেই। তবে বর্তমানে এ ভাষা রোমান হরফে লেখা হয়।

তিব্বতি-চীনা ভাষাগোষ্ঠী আবার কয়েকটি শাখায় বিভক্ত। যেমন: বোডো, কুকি-চীন, সাক-লুইশ ও লোলো-বার্মিজ শাখা। মান্দি বা গারো, ককবোরক (ত্রিপুরা), লিঙ্গাম, পাত্র বা লালং, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি ভাষাসমূহ বোডো শাখার অন্তর্ভূক্ত। মৈতেয় বা মণিপুরী, লুসাই, বম, খেয়াং, খুমি, ম্রো, পাংখো প্রভৃতি ভাষাগুলো কুকি-চীন শাখাভুক্ত।

বাংলাদেশের রাখাইন, ওঁরাওদের কুড়ুখ, পাহাড়িকা ও মাহালি ভাষা দ্রাবিড় ভাষা পরিবারে অন্তর্ভূক্ত। রাখাইন ভাষা অত্যন্ত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ একটি ভাষা। রাখাইন ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। ওঁরাওদের কুড়ুখ ভাষাটি আদি ও কথ্য ভাষা। আর বাংলাদেশে ইন্দো-আর্য পরিবারভুক্ত ভাষার মধ্যে বাংলা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া এই পরিবারে আদিবাসীদের মধ্যে চাকমা ভাষা এবং সাদরি ভাষাও রয়েছে। মণিপুরীদের বিষ্ণুপ্রিয়া, হাজং প্রভৃতি ভাষাও এই শ্রেণিভূক্ত।

ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে প্রতি দুই সপ্তাহে হারিয়ে যাচ্ছে একটি ভাষা। বিলুপ্তপ্রায় ভাষা রক্ষায় গুরুত্বারোপ করেছে ইউনেস্কো। এজন্য ২০১৯ সালকে ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী মাতৃভাষাবর্ষ’ ঘোষণার পর ‘২০২২-২০৩২’ সালকে ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী মাতৃভাষা দশক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। কিন্তু সেটি পালনে সরকারি উদ্যোগগুলোর গতি তেমন নেই বললেই চলে।

বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন-২০১০’ প্রণয়ন করে। কিন্তু ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’ দেশের আদিবাসী ভাষাগুলোর যে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা জরিপ শুরু করেছিল, তা এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করা হয়নি। ফলে এ দেশে কয়টি আদিবাসী জাতি আছে, তাদের ভাষার সংখ্যা কত— এসব ভাষার অবস্থাই বা কেমন, তা সুরক্ষায় সরকারি উদ্যোগের খবরও আমরা পাইনি।

ভাষা রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ তেমন না হলেও আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের বিষয়ে কিছু প্রশংসনীয় উদ্যোগ রয়েছে। সরকার সব শিশুর মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে প্রথম দফায় পাঁচটি  মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী শিশুদের পড়াশোনা শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করে ২০১২ সালে। এর জন্য প্রথমে জাতীয় পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রথম দফায় পার্বত্য অঞ্চলের চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা এবং সমতলের সাদরি ও গারো এই পাঁচটি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ চূড়ান্ত হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ম্রো, মণিপুরি, তঞ্চঙ্গ্যা, খাসি, বমসহ ছয়টি ভাষায় এবং তৃতীয় পর্যায়ে কোচ, ওঁরাও (কুড়ুখ), হাজং, রাখাইন, খুমি ও খ্যাং ভাষার পর অন্যান্য ভাষাতেও প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। সে অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ের ৫টি ভাষায় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতেই প্রাক-প্রাথমিকে আদিবাসী শিশুদের হাতে নিজ নিজ ভাষার বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি সম্ভব হয় ২০১৭ সালে।

এ বছরও ওই পাঁচটি মাতৃভাষায় পাঠদানের বই বিতরণ করা হয়। তা শুধু প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। চাকমা ও মারমাদের নিজস্ব হরফে বইগুলো লেখা হলেও বাকি জাতির বইগুলো লেখা হয়েছে বাংলা, ইংরেজি ও রোমান হরফে। ভাষা রক্ষায় সেটিও ভালো উদ্যোগ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু ওই ভাষার শিক্ষক বা প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি কাজে আসছে না। একইভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী বাকি ভাষাভাষীদের মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজও চলছে ঢিমেতালে। ফলে সার্বিকভাবে আদিবাসী শিশুরা মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিতই থেকে যাচ্ছে। অথচ একই দেশে বাঙালি শিশুরা পড়াশোনা করছে চিরচেনা মায়ের ভাষায়। তাই সবার জন্য মাতৃভাষা শিক্ষা কার্যক্রমে কাঙ্খিত সাফল্য আসছে না।

আদিবাসী ভাষাগুলো কতটা বিপণ্ন— এ নিয়ে কয়েক বছর আগে আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘সামার ইনস্টিটিউট অব লিঙ্গুইস্টিকস’-এর বাংলাদেশ শাখা প্রায় ৩০টি আদিবাসী ভাষার ওপর একটি জরিপ চালায়। জরিপ চলে ‘ফিশম্যান মানদণ্ড’ মোতাবেক। একটি ভাষার অবস্থা কী, সেটি বোঝাতে এই মানদণ্ডের রয়েছে আটটি স্তর। কোনও ভাষা চতুর্থ স্তরের পরের স্তরে চলে গেলেই ওই ভাষা বিপণ্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ওই মানদণ্ডের প্রথম স্তরের বিবেচনার বিষয় ছিল, ভাষাটি ঊর্ধ্বতন সরকারি পর্যায়ে ব্যবহৃত হয় কি না। বিপণ্নতার শুরু যে পঞ্চম স্তরে, সেখানে বিচার্য বিষয়— ভাষাটির মাধ্যমে শিক্ষার ব্যাপক বিস্তৃতি এবং ওই ভাষায় সাহিত্য রয়েছে কি না। বাস্তবতা হলো এই মানদণ্ড মোতাবেক বাংলাদেশের প্রায় সব আদিবাসী মাতৃভাষাই আছে বিপণ্নের স্তরে।

নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা ছাড়া শিক্ষা বা কোনও কাজেই নিজ ভাষা ব্যবহার করতে পারে না আদিবাসীরা। আবার এসব ভাষায় বাংলা ভাষার অনুপ্রবেশ ঘটেছে প্রবলভাবে। বয়সে প্রবীণ আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষাটির কোনও ব্যবহারই জানে না। দেশের সবচেয়ে বড় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী চাকমাদের ভাষায় সাহিত্য রয়েছে। কিন্তু ওই সাহিত্য খুব কম লোকের কাছেই পৌঁছে। জরিপে অংশ নেওয়া চাকমাদের পঞ্চাশ শতাংশ বলেছে, তারা নিজ ভাষার নানা উপকরণ পড়েছে; কিন্তু সেগুলো তাদের কঠিন মনে হয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ বলেছে, শুধু প্রার্থনার সময় তারা মাতৃভাষা ব্যবহার করে।

‘সামার ইনস্টিটিউট অব লিঙ্গুইস্টিকস’-এর জরিপে দেখা যায়, আদিবাসীরা প্রয়োজনীয়তার চাপে পড়ে নিজ মাতৃভাষা থেকে এখন বাংলাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। তবে এর প্রভাব সমতলের আদিবাসীদের মধ্যেই বেশি। সাঁওতালদের ৪৯ শতাংশই মনে করে, নিজ মাতৃভাষার চেয়ে আজ বাংলাই বেশি প্রয়োজনীয়। উত্তরবঙ্গের কোদা ও কোল জাতির কেউই এখন আর নিজ ভাষায় পড়তে বা লিখতে পারে না। একই অবস্থা টাঙ্গাইলের কোচ ও দিনাজপুরের কড়া, ভুনজার, মুসহরদের।

আবার বেশিরভাগ আদিবাসী তাদের মাতৃভাষা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনে দ্বিতীয় আরেকটি ভাষা হিসেবে বাংলা জানে বা লিখতে বাধ্য হয়। কেউ কেউ তিনটি ভাষাও জানে। যেমন— বান্দরবানের খুমিরা নিজ ভাষা ছাড়াও মারমা ও বাংলা জানে। উত্তরবঙ্গের ওরাওঁরা বাংলা, সাঁওতালি এবং সাদরি ভাষায় কথা বলে।

সাঁওতাল, চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা— এই প্রধান পাঁচটি আদিবাসী ছাড়া অন্য আদিবাসীদের ভাষা বিপণ্নের দ্বারপ্রান্তে। ঘরের মধ্যে ছাড়া তাদের মাতৃভাষা চর্চার সুযোগ নেই বললেই চলে। নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা শিক্ষার সুযোগ ও বাস্তবতার কারণে নিজের ভাষার চেয়ে বাংলা ও ইংরেজি চর্চাকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। ফলে এখন আদিবাসীদের ভাষার উচ্চারণে শুধু পরিবর্তনই ঘটছে না; বরং তাদের শব্দভাণ্ডারে অনেক বাংলা শব্দও স্থান করে নিয়েছে। আবার যেসব আদিবাসী দীর্ঘদিন ধরে শহরে বসবাস করছে, পারিপার্শ্বিকতার নানা কারণে তাদের মাতৃভাষা আজ তারা প্রায় ভুলতে বসেছে।

তাই নিজেদের মাতৃভাষা রক্ষায় আদিবাসীদের নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে প্রথমে। কোনও কোনও অঞ্চলে তেমন কিছু উদ্যোগের খবরও পাই আমরা। গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত ‘চাকমা বর্ণমালার জন্য ইনজেবের লড়াই’ শিরোনামে সমির মল্লিকের প্রতিবেদনটি বেশ প্রেরণাদায়ক। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৪ সাল থেকে ১৯ বছর ধরে ১১ হাজারের বেশি মানুষকে চাকমা বর্ণমালা শিখিয়েছেন খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পূর্ব কাঠালতলী গ্রামের তরুণ কৃষক ইনজেব চাকমা। মাতৃভাষার প্রচারের জন্য ‘নোয়ারাম চাকমা সাহিত্য পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি। এর মাধ্যমে খাগড়াছড়ি ছাড়াও রাঙামাটি ও বান্দরবানের তিন পার্বত্য জেলায় ২১৮টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ১১৮ জনকে চাকমা বর্ণমালা শেখান ইনজেব ও তার সংগঠন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, হেডম্যান, কার্বারি ও চেয়ারম্যানদেরও চাকমা বর্ণমালা শেখানো হচ্ছে। ইনজেবের লক্ষ্য, ২০৫০ সালের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চার লাখ ৮৩ হাজার চাকমার সবাইকে নিজস্ব বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। নিজ জাতির মাতৃভাষা রক্ষায় ইনজেবের এই উদ্যোগ অন্য আদিবাসী জাতিগুলোর জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে।

ভাষা রক্ষায় আদিবাসী পরিবারগুলোকে মাতৃভাষার চর্চা অব্যাহত রাখা জরুরি। এ ছাড়াও প্রয়োজন অতিদ্রুত আদিবাসীদের ভাষাগুলো সুরক্ষার পাশাপাশি আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদান পুরোপুরি নিশ্চিত করা, আদিবাসী এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপন এবং সেখানে বাধ্যতামূলকভাবে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ। আর এজন্য সত্যিকার আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেই। তবেই ভাষার এ দেশে রক্ষা পাবে সব জাতির মাতৃভাষা। তা না হলে একটি প্রশ্ন উঠবেই— বাংলার আধিপত্যে কি হারিয়ে যাবে আদিবাসী ভাষা?

লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে সকাল-সন্ধ্যা ডটকমে, প্রকাশকাল: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

© 2024, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button