কীর্তিমান বাঙালি

রশীদ করিম : বাংলাদেশের আধুনিক উপন্যাস নির্মাণকলার অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পী

রশীদ করিমের জন্ম ১৯২৫ সালের ১৪ আগস্ট কলকাতায়। দেশ ভাগের পর ১৯৫০ সালে সপরিবারে কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। পঞ্চাশের দশকেই লেখালেখির সূচনা গল্প দিয়ে। ১৯৪২ সালে সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ‘আয়েশা’ গল্পটি। প্রথম উপন্যাসেই তিনি বাংলা সাহিত্যে তাঁর আসনটি পাকাপোক্ত করে ফেলেন। ভারত ভাগের প্রেক্ষাপট নিয়ে ১৯৬১ সালে প্রকাশিত উত্তম পুরুষ উপন্যাসটির জন্য তিনি আদমজী পুরস্কার লাভ করেন। কবি শামসুর রাহমান বলেছিলেন, ‘তাঁর উত্তম পুরুষ উপন্যাসের ভাষা আশ্চর্য সহজ সরল ও আধুনিক। রশীদ করিমকে আমি আমার সেরা বন্ধু মনে করি।’ রশীদ করিমের অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে: প্রসন্ন পাষাণ, আমার যত গ্লানি, প্রেম একটি লাল গোলাপ, সাধারণ লোকের কাহিনী, একালের রূপকথা, সোনার পাথরবাটি, বড়ই নিঃসঙ্গ, মায়ের কাছে যাচ্ছি, চিনি না, পদতলে রক্ত, লাঞ্চবক্স। তাঁর একমাত্র গল্পগ্রন্থ প্রথম প্রেম। প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে আছে: আর এক দৃষ্টিকোণ, অতীত হয় নূতন পুনরায়, মনের গহনে তোমার মুরতিখানি প্রভৃতি। তাঁর প্রকাশিত সর্বশেষ গ্রন্থ জীবনমরণ নামের আত্মজীবনী।

বাংলা সাহিত্যে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রশীদ করীম বাংলা একাডেমী পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় একুশে পদক, লেখিকা সংঘ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
রশীদ করীম ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক উপন্যাস নির্মাণকলার অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পী। তাঁর নির্মেদ সাবলীল গদ্য কাব্যিক দ্যোতনাময়। উপন্যাসের পাশাপাশি ছোটগল্প ও প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রেও ছিলেন অনন্য। সমৃদ্ধ জীবনাভিজ্ঞতা, অনন্য ভাষাভঙ্গি এবং স্বকীয় গদ্যশৈলীর মধ্য দিয়ে রশীদ করীম বাংলা কথাসাহিত্যকে ঋদ্ধ করেছেন। তাঁর অগ্রজ আবু রুশদও ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখক।

লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন তিনি অনেকদিন থেকে, তা প্রায় ২০ বছর; চলেও গেলেন অনেকটা নিভৃতেই। ২৬ নভেম্বর ২০১১ইং,শনিবার ভোর চারটায় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক সেন্টারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কথাশিল্পী রশীদ করিম। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

তথ্য ও ছবি: সংগৃহীত

© 2011 – 2018, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button