পত্রিকায় ইন্টারভিউ

এক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা দুইবার আমাকে তার ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল

লেখক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। বাবা মো. আবদুল সবুর এবং মা সাবিহা বেগম। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহী সালেক খোকন নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সেই কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে আনন্দভুবনের হয়ে তার মুখোমুখি হয়েছেন প্রশান্ত অধিকারী

আনন্দভুবন: আপনি আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। এ বিষয়ক চারটি গ্রন্থও রয়েছে। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কাজ বিশেষ করে গণকবর ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্য সংগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন কবে থেকে?

সালেক খোকন: মূলত আমি ছিলাম একজন সংগঠক। ছাত্র ইউইনয়নের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম ছাত্র বয়স থেকে। পরবর্তীসময়ে গ্রুপ থিয়েটার করেছি। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম ও আছি। এসব কাজের মাধ্যমে সমাজ ও দেশের প্রতি একধরণের দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। লেখক হয়ে ওঠার পর আদিবাসী বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয় নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রেও ওই দায়িত্ববোধগুলোই ঘুরে ফিরে আসে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করছি বছর পাঁচেক আগে থেকে।

আনন্দভুবন: মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি অনেক ব্যাপক। এরমধ্য থেকে গণকবর ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লিখালেখির ইচ্ছাটা তৈরির পেছনে বিশেষ কোনো ঘটনা আপনাকে প্রভাবিত করেছে কি?

আনন্দভুবন, বিজয়দিবস-২০১৪

সালেক খোকন: পেশাগত কারণে একবার গিয়েছি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। সেখানে স্থানীয় এক সাংবাদিকের মুখে শুনি বহলার হত্যাযজ্ঞের কথা। ১৯৭১-এর ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা ৩৯জন নিরীহ নিরাপরাধ মানুষকে সেখানে হত্যা করে নির্মমভাবে। তাঁদের ভেতর ৩৩জন শহীদের ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত লাশ দাফন করা হয় একটি গণকবরে। বহলায় গিয়ে আবিষ্কার করি জংলি গাছে ভরে আছে কবরটি। ওটা যে গণকবর দেখে বোঝার উপায় নেই। কবরঘেরা ছোট্ট দেয়ালে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল কয়েকজন মজুর। আনমনে তারা ক্লান্তির থুথু ছুঁড়ে দিচ্ছিল কবরের দিকে। বিষয়টি ভীষণ নাড়া দেয় আমাকে। যাদের জীবনের বিনিময়ে এ দেশটা স্বাধীন হলো তাদের আমরা মনে রাখিনি। সারাদেশে বহলার মতো শহীদদের বহু গণকবর পড়ে আছে অনাদর,অযত্ন আর অবহেলায়। শহীদদের ওই গণকবরটির বেহাল দশা দেখেই মনের ভেতর একরকম দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয়। মূলত সে থেকেই শুরু গণকবর ও গণহত্যা নিয়ে কলম ধরা। মূলত গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও শহীদ পরিবারগুলো তথ্যের ভিত্তিতে গণকবরের পেছনের কথা তুলে আনার চেষ্টা থাকে লেখায়।

আনন্দভুবন:তখনই কি যুদ্ধাহতদের নিয়ে কাজ শুরু করেন?

সালেক খোকন: না, তার বছর খানেক পরে।

আনন্দভুবন:এই কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কোনো ঘটনা মনে পড়ে যা আপনাকে আজও আন্দোলিত করে?

সালেক খোকন: বিজয় দিবসে সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এক অনুষ্ঠানে আলাপ হয় দিনাজপুরের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণকিশোর দাসের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের মাইনের আঘাতে তাঁর বাম পা’টি উড়ে যায়। পঙ্গু ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে পরিবার চালান। সেদিন তিনি আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘প্রতি বছর আমাদের সংবর্ধনা দিতে আসেন মন্ত্রী ও এমপিরা। তাঁদের বলা সমস্ত কথাই পরদিন পত্রিকায় ছাপা হয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের কথা কেউ শোনেন না। তাই না বলা কথাগুলো ঘুরপাক খায় মনের গভীরেই।’ একজন মুক্তিযোদ্ধার এমন আকুতি আমাকে স্পর্শ করে। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্য সংগ্রহের। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে রেকর্ড করি মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ নিয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের না বলা কথাগুলো, সঙ্গে থাকে নিজের তোলা আলোকচিত্র, ভিডিও ও মুক্তিযুদ্ধকালীন তাদের বিভিন্ন প্রামাণ্য ছবি।

আনন্দভুবন: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এ পর্যন্ত আপনার কয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে?

আনন্দভুবন, বিজয়দিবস-২০১৪

সালেক খোকন: দুটি। রক্তে রাঙা একাত্তর ও যুদ্ধাহতের ভাষ্য। দুটো বই-ই প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ। সামনের বই মেলায় আরেকটি বই আসছে, নাম ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’।

আনন্দভুবন:এই কাজ করতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়েছিল?

সালেক খোকন: প্রথম দিকে প্রধান সমস্যা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অভিমান ভাঙানো। এখন সেটি নেই। দেখুন, যারা নিজের অঙ্গ দিয়েছে দেশের স্বাধীনতার জন্য, তাদের আত্মত্যাগ কি একাত্তরেরই সীমাবদ্ধ? মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাদের শারীরিক নানা সমস্যা ভোগ করতে হচ্ছে। এ ত্যাগের মূল্য জাতি কি দিতে পারবে? কিন্তু স্বাধীনতার পরে দেশ নিয়ে তাদের মনে চাপা কষ্ট বাসা বেঁধেছে। পাওয়া না পাওয়ার বেদনা, স্বাধীন দেশে রাজাকারদের মন্ত্রী বনে যাওয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যায্য সম্মান না থাকা, এইসব কষ্ট থেকেই তারা কথা বলতে চাইত না। এখন তাঁরা আমাকে নিজের মানুষ ভাবতে শুরু করেছে। এক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা দুইবার তার ঘর থেকে আমাকে বের করে দিয়েছিলেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলবেন না। আমি হাল ছাড়িনি। যোগাযোগ রেখেছি। মাস দুয়েক পরে তিনি ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন।

আনন্দভুবন: আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে কি মনে হয়, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সরকারিভাবে যে সুযোগ-সুবিধা ও কর্মকাণ্ড হচ্ছে তা কি যথেষ্ট ?

সালেক খোকন: মোটেই যথেষ্ট নয়। আজ যদি আপনাকে এক কোটি টাকা দিয়ে আপনার একটি পা কেটে নিতে চাই, আপনি কি তা দেবেন। তাই শুধু টাকার বিবেচনায় নয়, তাঁদের ভরণপোষণের সমস্ত দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত। যদিও বর্তমান সরকার তাদের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে ভাতা বৃদ্ধি করেছে। আমি মনে করি, তাদের আবাসনের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা উচিত। তবে এরজন্য যুদ্ধাহতদেরও আন্তরিক হতে হবে। সুবিধালাভের জন্য বিভেদে যুক্ত হওয়া উচিত হবে না। আমরা সেটিও দেখিতে চাই না।

আনন্দভুবন: নিজের কাজের বাইরে লেখার কাজের জন্য এত সময়, ধৈর্য ও গবেষণার সুযোগ পান কী করে?

সালেক খোকন: দেখুন, আমি মনে করি কমিটমেন্ট, অদম্য ইচ্ছা আর পরিশ্রম থাকলে সব বাধাই পেরুনো সম্ভব। আমি অধিকাংশ কাজ করি ছুটির দিনে। ফলে সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করে আমার স্ত্রী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা। তারা পাশে না থাকলে কাজটা নিয়ে এগোতে পারতাম না। মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, আমার দেশের ইতিহাসের কথা তুলে আনাতেই মনটাকে নিবিষ্ট করি। একজন সাধারণ লেখক-গবেষক হিসেবে এই কাজটা করে যেতে চাই। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এটি দায়িত্ব বলে মনে করি।

আনন্দভুবন: যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ছাড়াও সামগ্রিকভাবে দেশে প্রান্তিক পর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কাজ,গবেষণা হয়েছে বলে মনে করেন কি?

সালেক খোকন: যা হয়েছে তা খুবই কম, বড় কাজগুলো হয়নি; তা যদি হতো তাহলে ৪২-৪৩ বছর পরও কেন আমাদের যুদ্ধাহতের ভাষ্য সংগ্রহ করতে হয়। যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কিংবা একাত্তরে নিজের অঙ্গটি হারিয়েছেন তাদের অধিকাংশের বয়স আজ ষাটের ওপরে। তাঁরা নানা রোগে-শোকে ভুগছেন। আর ৫ কিংবা ১০ বছর পর এদের অনেককেই আমাদের হারাতে হবে। ভেবে দেখুন এক একজন মুক্তিযোদ্ধার জীবনের ইতিহাসই এক একটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। তাঁদের হারানোর অর্থ ইতিহাসের প্রত্যক্ষদর্শীকে হারানো। এখনও আমরা খুঁজে পাই অবহেলায় পড়ে থাকা গণকবর। তাহলে ইতিহাসের কি কাজ হলো! কিংবা আমরা কীভাবে রক্ষা করলাম শহীদ বা যুদ্ধাহতদের আত্মত্যাগকে। তবে নতুন প্রজন্ম কিন্তু অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। হয়তো আরও দেবে। মুক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে অনুপ্রেরণার বিষয়।

আনন্দভুবন, বিজয়দিবস-২০১৪

আনন্দভুবন: আপনি এ পর্যন্ত কতজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে কাজ করেছেন? লেখক হিসেবে আপনার পাঠক আসলে কারা? কিংবা কোন শ্রেণির পাঠকের উদ্দেশ্যে আপনি লিখছেন?

সালেক খোকন: প্রায় সত্তরের ওপর যুদ্ধাহতের ভাষ্য সংগ্রহ করেছি। লেখাই বলে দেয় পাঠক কারা। গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শহীদদের স্মৃতি রক্ষার আবেদন, রাজাকার, আলবদর ও আলশামসদের অত্যাচারের কাহিনি এবং স্বাধীনের পর শহীদ পরিবারগুলোর বেঁচে থাকার লড়াইয়ের কথা। এছাড়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্য থেকে তুলে আনার চেষ্টা করি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, মুক্তিযুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষের মনোভাব, পাকিস্তান আর্মি ও রাজাকারদের অত্যাচারের চিত্র, যুদ্ধের বিভীষিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তাক্ত ইতিহাস ও স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পরের দেশ নিয়ে তাঁদের ভাবনাগুলো।

প্রায় প্রত্যেকটি ভাষ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা অকাট্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরবর্তী প্রজম্মের প্রতি। দেশ নিয়ে স্বপ্নের কথাগুলোও বলেছেন তাদের উদ্দেশেই। আমার লেখায় সে-সব কথাই উপস্থাপিত হয়েছে সরল গদ্যে, একেবারে গল্পের মতো করে। তাই যেকোনো সাধারণ পাঠকই যুদ্ধাহতের ভাষ্য পড়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে উদ্বুদ্ধ হবে এমনটাই আশা করি। তবে আমার মূল টার্গেট তরুণ প্রজন্ম। কারণ তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে মুক্তিযুদ্ধেও ইতিহাস ও বাস্তবতা জেনে নিয়ে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হবে। তরুণ প্রজন্মেও কাছে ইতিহাসের সত্যকে তুলে ধরার জন্যই আমার এ প্রয়াস।

আনন্দভুবন:ভবিষ্যতে আপনার এই বিষয়ে কাজের কী কী পরিকল্পনা আছে?

সালেক খোকন: যে কাজটি করছি তা একান্ত ব্যক্তি উদ্যোগে। সময় ও পরিশ্রমের পাশাপাশি খরচের একটি বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। তবুও নিজের মতো করে দেশের সকল গণকবরের শহীদদের আত্মত্যাগের কাহিনি ও সকল যুদ্ধাহতদের সংগ্রামের কাহিনি লিপিবদ্ধ করা এবং তা পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। এ সমস্ত তথ্য ও দলিল নিয়ে অনলাইনে একটি আর্কাইভ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বছর খানেকের মধ্যে গণকবর ও যুদ্ধাহতদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে ব্যাপকভাবে একটি আলোচিত্র প্রদর্শনীর কাজ শুরু করব।

আনন্দভুবন:যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এমন কোনো অবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন সারাজীবন মনে রাখার মতো?

সালেক খোকন: প্রায় প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাই কথা বলতে গিয়ে চোখ ভিজিয়েছেন। অনেকে তার লিখা ছাপানোর পর তা দেখে খুশিতে কেঁদেছেন। আমি মনে করি এটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। কী পেলাম ভাবি না। যে কাজ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করবে তা করে যেতে চাই। যাদের ইন্টারভিউ করেছি সম্প্রতি তাদের প্রায় সবাইকে মাছরাঙা টেলিভিশনে ডাকা হচ্ছে একটি অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের কথা শোনানোর জন্য। ওই মুক্তিযোদ্ধারা যখন এতে সম্মনিত বোধ করে তখন মনটা ভরে যায়।

আনন্দভুবন:যেহেতু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাজ করছেন, সেহেতু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার ভাবনার কথা যদি বলেন ?

সালেক খোকন: অল্প কথায় তো মুক্তিযুদ্ধের ভাবনার কথা বলা যাবে না। শুধু এটুকুই বলব, আমাদের মাতৃভ‚মির জন্যে যে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল তার ইতিহাস হচ্ছে গভীর আত্মত্যাগের ইতিহাস, অবিশ্বাস্য সাহস ও বীরত্বের ইতিহাস এবং বিশাল এক অর্জনের ইতিহাস। যখন কেউ এই আত্মত্যাগ, বীরত্ব আর অর্জনের ইতিহাস জানবে, তখন সে যে শুধু দেশের জন্যে একটি গভীর ভালোবাসা আর মমতা অনুভব করবে তা নয়, এই দেশ, এই মানুষের কথা ভেবে গর্বে তার বুক ফুলে উঠবে।

আনন্দভুবন, বিজয়দিবস-২০১৪

ইন্টারভিউটি ছাপা হয়েছিল বিনোদন পাক্ষিক আনন্দভুবনে, প্রকাশকাল: বিজয়দিবস-২০১৪ (বিশেষ সংখ্যায়)

© 2017 – 2018, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button