মুক্তিযুদ্ধ

৭১-এর বীরদের রক্তাক্ত স্মৃতি

১৯৭১ সালে মো. ফরিদ মিয়া ছিলেন সেনাবাহিনীর সিপাহী। আর্মি নম্বর ৩৯৫৩৭৭২। যুদ্ধ করেছেন ২ নম্বর সেক্টরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় এক সম্মুখযুদ্ধে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। মাথাসহ তার শরীরে আঘাত হানে পাকিস্তানি সেনাদের ২৮টি গুলি। এতে তার বামপায়ের হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়। তার সারা শরীর প্লাস্টারে আবৃত থাকে প্রায় আড়াই বছর। শরীরের বিভিন্ন অংশে লাগানো হয় কৃত্রিম পাত।

মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ মিয়া যুদ্ধ করেন কালতলা, আখাউড়া, গঙ্গাসাগর, বানছারামপুর এলাকায়। পরে তিনি গুলিবিদ্ধ হন কসবায়। তার মুখেই শুনি রক্তাক্ত সে দিনটির কথা। তার ভাষায়, ‘‘আমরা ছিলাম বেনুপুর ক্যাম্পে। কমান্ডে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হুমায়ুন কবির। ১৭ অক্টোবর ১৯৭১। কসবার তারাপুর রেললাইনের পাশে কয়েকটি গ্রামে আমরা ডিফেন্স গড়ি। সব মিলিয়ে আমরা ২৫০জন।
২০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬.৩০। নির্দেশ আসে পুরান বাজার ও নতুন বাজার মিলে পুরো কসবা অ্যাটাকের। আমাদের সঙ্গে যোগ দিল ইন্ডিয়ান আর্মিরা। ২১ অক্টোবর রাত ২টা। রোজার মাস। সেহেরি খেয়ে আমরা সামনে এগোই। পেছনে আমাদের বাঙ্কারগুলোতে অবস্থান নেয় ইন্ডিয়ান আর্মি। জ্বর হওয়াতে আমার কাছে ছিল ওয়ারলেসের দায়িত্ব। বড় বড় ঘাস পেরিয়ে আমরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের কাছাকাছি চলে আসি।
পরিকল্পনা ছিল ভোরের দিকে ইন্ডিয়ান আর্মিরা আর্টিলারি মারবে। কিন্তু তার আগেই পাকিস্তানি সেনাদের বাঙ্কারগুলো আমরা দখলে নিলাম। ওইসময় সশস্ত্র অবস্থায় পাকিস্তানি সেনারা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আমরাও এগিয়ে যাই ৫শ গজ সামনে। অল্পসময়ের মধ্যেই ইন্ডিয়ান আর্মির আর্টিলারি ছোঁড়া বন্ধ হয়ে যায়। সে সুযোগে পাকিস্তানি সেনারা আমাদের বাঙ্কার লক্ষ্য করে আর্টিলারি ছোঁড়ে। সেখানে অবস্থান করছিল ইন্ডিয়ান আর্মি। দূর থেকে আমরা দেখলাম- শত শত ইন্ডিয়ান সেনা মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
চারপাশ থেকে গোলাগুলি তখনও চলছে। ওদের আক্রমণে আমরা টিকতে পারছিলাম না। কোনাবনে ছিল আমাদের নিজস্ব আর্টিলারি। ওয়ারলেসে আমরা সেখানকার সাহায্য চাইলাম। কিন্তু তার আগেই চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেল ২৬জন সহযোদ্ধা।
আমি কয়েকজনের রক্তাক্ত লাশ সরাচ্ছিলাম। হঠাৎ দূর থেকে এক পাকিস্তানি সেনা আমাকে লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করে। অমনি আমি ছিটকে পড়ি। কিন্তু জ্ঞান তখনও আছে। সহযোদ্ধারা তুলা ভিজিয়ে সামান্য পানি আমার মুখে দিচ্ছিলেন। দরজার একটি পাল্লায় শুইয়ে তারা আমাকে নিয়ে যায় কমলাসাগরের কাছে। সেখানে ছিলেন খালেদ মোশারফ। তিনি শুধু বললেন- ‘ফরিদকে আমার গাড়িতে উঠাও।’ অমনি একটি সেল এসে পড়ে সামনে। বিকট শব্দে স্প্লিন্টার ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। একটি স্প্লিন্টার এসে লাগে স্যারের মাথায়। এরপর আমার আর কিছুই মনে নেই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি পুনা হাসপাতালে।’’
আমাদের কথা হয় আরেক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এস এম সামছুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ট্রেনিং নিয়েছেন মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে, ইকো-১ ক্যাম্পে। যুদ্ধ করেছেন ৫ নং সেক্টরের বালাট সাব-সেক্টরে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের ব্রাশফায়ারের একটি গুলি তার বামহাতের পেছন দিয়ে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত করে। ফলে তার দু’পা প্যারালাইজড হয়ে যায়। তিনিও হুইল চেয়ারে চলাচল করেন।
ওইদিনের কথা উঠতেই তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাদের শক্তিশালী ডিফেন্স ছিল বৈশারপাড় গ্রামে। মঙ্গলকাটা বাজার থেকে আমরা তাদের ওপর আক্রমণ করি । প্রবল আক্রমণের মুখে তারা পিছু হটে। ডিফেন্স সরিয়ে নেয় ৫শ গজ পেছনে। ষোলঘর গ্রামে। আমরাও এগিয়ে আসি। বৈশারপাড় গ্রামেই পাকাপোক্ত ডিফেন্স গাড়ি।
দিনটি ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১। বিকেল ৫টা। খবর ছিল আমাদের ওপর অ্যাটাক হওয়ার। আমরাও প্রস্তুত। বাঙ্কারের ভেতর পজিশন নিয়ে আছি। বাঙ্কারটি একটি বাড়ির ভেতর। বাড়ির পূর্বদিকে ছিল হাওর অঞ্চল। সবার দৃষ্টি সামনে। চোখের পলক যেন পড়ছেই না। কখন আক্রমণ হয় সে অপেক্ষাতে আছি! হঠাৎ দেখলাম দূরে ধানখেতের ওপাশে একজন লোক। সে দূর থেকে হাত উঁচিয়ে আমাদের অবস্থান দেখিয়ে দিচ্ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের ওপর মর্টার হামলা শুরু হল। আমরা ছিলাম ষোলজন। সবাই বাইরে পজিশন নিলাম।
আমি আশ্রয় নিই একটি মেরাগাছের নিচে। ট্রেনিংয়ে নির্দেশ ছিল গাছের সোজাসুজি পজিশন না নেওয়ার। এতে গাছ ভেদ করে কিংবা ছিটকে এসে গুলি লাগার ভয় থাকে। আমার পজিশন তাই গাছের আড়াআড়িতে। পাশেই ছিলেন এলএমজিম্যান। কোথা থেকে গুলি আসছে তা দেখে, আমি তাকে নির্দেশ করি। এলএমজিম্যানও ওই অবস্থানে গুলি চালায়। চারদিকে শুধু গোলাগুলির শব্দ। হঠাৎ পূর্ব-দক্ষিণ দিকে ব্রাশফায়ার শুরু হয়। সর্তক হওয়ার আগেই একটি গুলি আমার বামহাতের পেছন দিয়ে শরীরের ভেতর ঢুকে যায়। আমি শব্দ করতে পারছিলাম না। চোখ দুটো ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছিল। বারবার মনে হচ্ছিল বাবা-মায়ের কথা। পজিশন অবস্থাতেই আমার মুখটা মাটিতে হেলে পড়ল।
মাটিতে মুখ পড়ে আমার দাঁতগুলো বেরিয়ে ছিল। আমার দিকে চোখ পড়ে সহযোদ্ধা আবু লেস ও সিরাজুল ইসলামের। তারা ভেবেছিল আমি হাসছি। খানিকটা অবাকও হল। কিন্তু মুখ দিয়ে যখন গলগলিয়ে রক্ত বেরোতে থাকল তখন তারা ছুটে এল। সহযোদ্ধা পাগলা সফি ও ভুইয়াও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
প্রথমে বালাট ইয়ুথ ক্যাম্পে এবং পরে আমাকে নেওয়া হয় শিলং মিলেটারি হাসপাতালে। সেখানে পিঠ কেটে বের করে আনা হয় একটি গুলি। গুলিটি আমার স্পাইনাল কর্ডে আঘাত করে। ফলে আমার দু পা প্যারালাইজড হয়ে যায়। কী এক ভাবনায় ডাক্তারকে বলে ওই গুলিটি আমি সংগ্রহ করেছিলাম। গুলিটির দিকে আজও তাকালে সবকিছু জীবন্ত হয়ে উঠে।’
কথা হয় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা জি এম জুলফিকারের সঙ্গে। তার বাড়ি নীলফামারী জেলার শাহীপাড়া গ্রামে। ৬নং সেক্টরের অধীনে তিনি যুদ্ধ করেন মিরপুর, কোটগজ, তেতুলিয়া, বাউড়া, বুড়িমারা, বড়খাতা প্রভৃতি এলাকায়। তিনি আমাদের শোনালেন নিজে জখম হওয়ার রক্তাক্ত সেই অপারেশনটির কথা। তার ভাষায়, ‘‘ সময়টা ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১। বাউড়া থেকে আমরা ডিফেন্স গড়ি লালমনিরহাট বড়খাতা রেল স্টেশনের কাছাকাছি। সেখানে ছিল পঁচিশ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের শক্তিশালী ঘাঁটি। আমরা ওই ঘাঁটিটি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করি।
সূর্যটা তখন হেলে পড়েছে। আমরাও অগ্রসর হই মেশিন গান, টমি গান, এসএলআর, টুইঞ্চ মটর প্রভৃতি অস্ত্র নিয়ে। আমাদের গ্রুপকে কমান্ড করেন ক্যাপ্টেন মতি। ইন্ডিয়ান আর্মিরাও ছিলেন পেছনটায়। তারা আর্টিলারি সাপোর্ট দিলে আমরা সামনে এগোই।
পাকিস্তানি সেনারাও তখন পাল্টা আর্টিলারি ছোড়ে। তুমুল গোলাগুলি চলে ভোর চারটা পর্যন্ত। আমার কাছে একটি এসএলআর। ক্রলিং করে সবাই সামনে এগোই। সুযোগের অপেক্ষায় আমরা ওঁত পেতে রই।
ওদের বাঙ্কারের কাছাকাছি ছিল একটি বাঁশঝাড়। আমাদের থেকে মাত্র ৭শ গজ সামনে। সেখানটায় যেতে পারলেই ওদের কুপোকাত করা যাবে। এই ভেবে সে দিকটায় আমি পা বাড়াই। কিন্তু তখনও জানি না কি ঘটতে পারে!
বাঁশঝাড়ের ভেতর পা রাখতেই হঠাৎ বিকট শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি ছিটকে পড়ি। হালকা ধোয়া কুণ্ডলি পাকিয়ে আবার বাতাসে মিলিয়ে যায়। বুঝে যাই এম ফোরটিন মাইনের বিস্ফোরণে পড়েছি। ডান পা’টা তখন নাড়াতে পারছিলাম না। পায়ের দিকে চোখ পড়তে আঁতকে উঠি। গোড়ালি উড়ে গেছে। চামড়ার আবরণ নেই। হাড্ডি গুড়ো হয়ে ঝরছে। রগগুলো ঝুলছে গাছের শিকড়ের মতো। শরীরটা শুধু ঝিমঝিম করছিল। আমি তখনও জ্ঞান হারাই নি। পড়ে আছি আইলের ভেতর। গামছা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিই পা’টাকে।

আমায় দেখে এগিয়ে আসে সহযোদ্ধারা। ক্রলিং করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে কাছে আসে সহযোদ্ধা তুতুল ও ববিন। এ সময় কাভারিং ফায়ার দেয় ফজলুর রহমান। তারা কাধে তুলে আমায় নিয়ে যায় ক্যাম্পে।
পা ছাড়াও শরীর ও মুখে লেগেছিল অসংখ্য স্প্লিন্টার। চিকিৎসার জন্য ক্যাম্প থেকে তাই আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভারতের বাকডোকরা সিএমএইচে। সেখানেই প্রথম অপারেশন হয়। পরে গ্যাগ্রিন হয়ে পায়ের মাংসে পচন ধরে। ফলে বিভিন্ন সময়ে অপারেশন হয় আরও ছয়বার।
১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি পুনা হাসপাতালে আমাদের দেখতে আসেন ইন্দিরা গান্ধী। আমি বসা ছিলাম মেঝেতে। সেদিন আমাদের উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেন, ‘চিন্তা কর না, পা লাগিয়ে আবার তোমরা চলতে পারবে। দেশে ফিরলে তোমরা বীরের সম্মান পাবে।’ ইন্দিরার সঙ্গে সেদিনকার একটি ছবি আমার হাতে তুলে দেন সে সময়কার কমান্ড ইনচার্জ ডা. টিডি দাস। আজও ছবিটির দিকে তাকালে মনে পড়ে যায় সবকিছু।’’
মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলীর বাড়ি লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার দলগ্রামে। ১৯৬৬ সালে তিনি যোগ দেন ইপিআরে। ব্যাচ নং- ০৩৯১। যুদ্ধ করেছেন ৪নং সেক্টরে। একাত্তরে আহত হওয়া ঘটনাটি বলতে গিয়ে চোখ ভিজে যায় এই যোদ্ধার। তিনি বলেন, ‘‘নলছড়ি পাহাড়ে আমরা ছিলাম ২৩ দিন। একদিন আসেন ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন রাও। তিনি বললেন- ‘আপ লোক আবি আপকা জায়গা করো, দেশকা লাগি লরো, সাহায্য করনা হাম করেগা, গোলাবারুদ জো চাহি হাম দেগা’। রক্ত তখন টলমল করছিল। আমরা সে সময় খুব বিড়ি খেতে চাইতাম। তিনি উৎসাহ দিয়ে উচ্চ কন্ঠে বললেন, ‘বাচ্চু তোম লোক এক দুশমন মারেগা, তো হাম এক বিড়ি দে গা’। শুনেই আমরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তুলি। ওইরাতেই আমাদের পরিকল্পনা হয় তামাবিল আক্রমণের।
২১ জুন ১৯৭১। রাত ১২টার পর নলছড়ি পাহাড় থেকে ইন্ডিয়ান আর্মিরা আর্টিলারি ছুঁড়ে তামাবিল ইপিআর সেন্টারের ওপর। সেখানে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের শক্তিশালী ঘাঁটি। ভোর ৪ টার পর আমরা পাহাড় থেকে নামি দুটি দলে। আমার সঙ্গে ছিলেন নায়েক সুবেদার মোস্তফা রহমান, ফজলুর রহমান, পিন্টু প্রমুখ। আমরা নলছড়ি দিয়ে হেঁটে আসামি বস্তির কিনার দিয়ে এসে তামাবিলে উঠি। আরেকটি দল তামাবিল চেকপোস্ট দখল করে নেয়।
তখন ভোর ৫ টা। আমরা পজিশন নিই তামাবিল ইপিআর সেন্টারের কাছাকাছি। প্রবল আর্টিলারির আঘাতে কোনোভাবেই সেখানে পাকিস্তানি সেনা থাকার কথা নয়- এই ভেবে সামনে এগোতে যাব অমনি বৃষ্টির মতো গুলি ও সেল এসে পড়তে থাকে। একটি গোলা এসে পড়ে ফজলুর রহমানের মাথায়। সে ছিল আমার পাশেই। চোখের সামনেই তার মাথাটা ছিটকে গেল। শীররটা মাটিতে পড়েই ছটফট করতে থাকল। অন্যপাশে ছিলেন নায়েক সুবেদার মোসলেম উদ্দিন। তার নিতম্বের পুরো মাংস গেল উড়ে।
নিজেকে সামলে নিয়ে আমি পাল্টা গুলি ছুড়ি। হঠাৎ কয়েকটা গুলি এসে লাগে আমার শরীরে। আমিও ছিটকে পড়ি। প্রথমে টের পাইনি। খানিক পরেই দেখলাম আমার বাম পায়ের উরু রক্তে ভিজে গেছে। হাত দিতেই দেখি পায়ের সব রগগুলো ছিড়ে বেড়িয়ে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথা করছিল পা’টা। বাম হাতের দিকে চোখ পড়তেই দেখলাম কব্জির ওপরে কনুইয়ের নিচ দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। ডান হাতের আঙুলের স্পর্শেই বুঝে গেলাম-হাড়টি উড়ে গেছে। স্প্লিন্টারের আঘাতে রক্তাক্ত হয় আমার ডান পা ও পেনিসের কিছু অংশও।
ব্যাথায় আমি ‘মা গো’ বলে চিৎকার করি। পাশেই ছিলেন নায়েক সেকান্দার। তিনি আমাকে তুলে নিয়ে যান তামাবিল ইন্ডিয়ান আর্মি ক্যাম্পে। সেখান থেকে আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হল শিলং হাসপাতালে। সেখানেই হাত ও পায়ের অপারেশন হয় কিন্তু তবুও আমি আর দাঁড়াতে পারলাম না।’’
এরকম অগনিত মুক্তিযোদ্ধার রক্তে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। আর এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গভীর আত্মত্যাগ, অবিশ্বাস্য সাহস, বীরত্ব এবং বিশাল এক অর্জনের ইতিহাস। যাঁরা এ স্বাধীনতা এনেছেন, সেই বীর সন্তানদের কথা ভেবে গর্বে আমাদের বুক ভরে ওঠে। আজ থেকে শত বছর পরেও জাতি স্মরণ করবে এই ত্যাগী মুক্তিযোদ্ধাদের। তাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস ছড়িয়ে পড়বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

লিখাটি প্রকাশিত হয়েছে দি রিপোট২৪.কমে, ১৭ মার্চ ২০১৪

© 2014 – 2021, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button