মুক্তিযুদ্ধ

এই আন্দোলনকে দ্বিতীয় প্রজম্মের মুক্তিযুদ্ধ বলা হচ্ছে – ডা. ইমরান এইচ সরকার

টেলিফোনে যোগাযোগ হচ্ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের জন্য সময় বের করা ডা. ইমরান এইচ সরকারের পক্ষে কঠিন। অবশেষে অনেক রাতে সময় নির্ধারিত হলো।  প্রথমে একটি স্পট, পরে সেখান থেকে অন্যখানে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই একাধিকবার স্থান পরিবর্তন। সাপ্তাহিক  কাগজ সম্পর্কে তার আগে থেকেই ধারণা ছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সুলতানা কামালের  জবানবন্দি কাগজ বুলেটিন আকারে প্রকাশ করে বিলি করেছে।

‘ ইমরান, অনেক ধরনের কথা হচ্ছে ! ’
কী কথা ?  কাদের কথা ?  আমাদের অবস্থান তো স্পষ্ট…
রেকর্ডার অন হয়, শুরু হয় সাক্ষাৎকার…
স্পষ্টবাদী, দৃঢ়চেতা, প্রত্যয়ী ইমরান বলতে থাকেন। কোনো প্রশ্নই এড়িয়ে যেতে চান না, যাবার প্রয়োজনও বোধ করেন না।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাগজ সম্পাদক জব্বার হোসেন  ও  প্রধান প্রতিবেদক শরিফুল ইসলাম পলাশ

কাগজ : শাহবাগ থেকে প্রজন্ম চত্বর, গণজাগরণ। এই আন্দোলনের শুরুর গল্পটা দিয়ে শুরু করতে চাই। এই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতিটা কেমন ছিল?

ডা. ইমরান এইচ সরকার : মূল সূচনার কথা যদি বলেন, তাহলে ফিরে যেতে হবে আরও একটু পিছনে।  প্রায় ২ বছর আগে থেকেই আমরা একটা তরুণ গ্রুপ কাজ করছিলাম। চেষ্টা করছিলাম যে তরুণরা ব্লগে লেখে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে- যারা এই চেতনা ধারণ করে তাদের কীভাবে এক প্লাটফর্মে  নিয়ে আসা যায়। পাশাপাশি আরেকটি বিষয়, আমরা চাইছিলাম যারা সেভাবে দলীয় রাজনীতি করে না, কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের কীভাবে এক করা যায়। সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন, ব্লগ এই জায়গাগুলোতে আমরা কাজ করছিলাম। আমাদের কয়েকটি ট্রায়াল ওয়ার্কের কথা বলি, যেমন ধরেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন পাকিস্তানে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়, তখনো আমরা প্রতিবাদ করি, রাজা দেবাশীষের বাবার লাশ যখন বাংলাদেশে আনার কথা উঠেছিল, তখনো তীব্র প্রতিবাদ করেছিলাম আমরা। ফলে আমাদের একটা প্রস্তুতি কিন্তু ছিল ভেতরে ভেতরে।

কাগজ : এই আন্দোলনের ১ মাস অতিক্রান্ত। আন্দোলনের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় গণজাগরণ আন্দোলন নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

ডা. ইমরান : আপনার প্রশ্নের মধ্যেই কিন্তু মূল্যায়নের উত্তরটা রয়ে গেছে। এই যে ‘ গণজাগরণ ’ শব্দটি, এটিই তো সবচেয়ে বড় অর্জন। আজকে দেশের সকল মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে। কি কিশোর কি বৃদ্ধ, যে যার মতো সংহতি প্রকাশ করেছে। যার যার জায়গা থেকে, এলাকা থেকে, প্রতিষ্ঠান থেকে, ঘর থেকে বাড়ি থেকে। একটি কিশোরী মেয়ে এখন তার স্কুলের মাঠে ছোট একটি কাগজের পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছে, ‘ জয় বাংলা ’ স্লোগান দিচ্ছে সেটাই তো সংহতি। সবাইকে যে শাহবাগ আসতে হবে, কিংবা সবাই এসেছে, তা তো নয়। কিন্তু মানসিকভাবে সকলের দাবি একটি বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। তা হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি। এ দেশের মানুষের মধ্যে, আমাদের সকলের মধ্যে একটা হতাশা ও বেদনা ছিল। আমরা একটা চাপা ক্ষোভ ও কষ্ট নিয়ে দিনযাপন করছিলাম। আমাদের হয়তো মনে হতো, আর কোনো দিন কিছু হবে না। এখন কিন্তু তা না, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আজ এটা স্পষ্ট যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারবে না। আমরা পরাজিত শক্তির কাছে হেরে যেতে আসিনি। হারতে হারতে আমরা জিতে যাওয়া জাতি। ইতিহাসই তার প্রমাণ বারবার দিয়েছে। তারপর দেখুন, মুক্তিযুদ্ধের যে স্লোগান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে সেগুলো চলে যাচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধ যে কারও ব্যক্তিগত বা দলীয় বিষয় নয়, এটা কিন্তু এই আন্দোলন আজকে স্পষ্ট করেছে। তারপর দেখুন জামায়াত বা রাজাকাররা যুদ্ধের পরও যতটা না সংকটে ছিল, এখন তারা তার চেয়েও বেশি সংকটে আছে এই মুহুর্তে। তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি তারা কোনো দিন কল্পনাও করতে পারেনি। আজ তারা সবখানে প্রত্যাখ্যাত, এটাও কম অর্জন নয়। তারা কিন্তু পুনর্বাসিতই হয়ে গিয়েছিল। আরেকটা বিষয়, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন যারা হয়তো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পার্থক্যের কারণে এক হচ্ছিল না, একই প্লাটফর্মে দাঁড়াচ্ছিল না, তারা কিন্তু আজকে এক মঞ্চে এসে দাঁড়িয়েছে।

কাগজ : এই আন্দোলনে এই আপনার সামনে চ্যালেঞ্জগুলো কী কী ? কোনো ধরনের চাপ…

ডা. ইমরান : ভয়ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা এসব যদি বলেন, এককথায় বলব, নেই। এসবের কোনো চাপ কখনোই বোধ করি না। আমরা কেউই না। যে চাপ বোধ করি, তা দায়িত্বের চাপ, কোটি মানুষের দাবির চাপ। এই চাপ জাগরণের, আমরা সে জাগরণের শুরুটা করেছি। যে ৬ দফা তা যেন পূরণ করতে পারি, পূরণ করে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারি।

কাগজ : গণজাগণ মঞ্চ এবং আন্দোলন নিয়ে নানা ধরনের কথাও কিন্তু হচ্ছে…

ডা. ইমরান : যারা বলছেন তাদের আজকের অবস্থান কিন্তু পরিষ্কার। আজকে খুব পরিষ্কারভাবে সবাইকে চেনা সহজ হচ্ছে। এমনকি যারা মুখে প্রগতিশীলতার কথা বলে ভেতরে ভেতরে প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ করছেন, তাদেরও চেনা হয়ে গেছে।

কাগজ : বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া এই আন্দোলনকে ‘ উসকানিমূলক ও বেআইনি’ বলেছেন। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য জানতে চাইছি।

ডা. ইমরান : মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের একজন বীরাঙ্গনা, উনার স্বামী জিয়াউর রহমানও একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা। রাজনৈতিকভাবেও বিএনপির নেতারা বিভিন্ন সময় দাবি করে আসছেন যে, তাদের দলে মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সবকিছু মিলিয়ে উনার প্রতি, বিএনপির প্রতি আমাদের একটা আশা ছিল। বিএনপির অন্যদের অবস্থান যা-ই হোক, খালেদা জিয়ার প্রতি আমাদের আশাটা বেশি ছিল, যেহেতু তিনি একাত্তরের একজন বীরাঙ্গনা, তিনি তার দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি একটু সময় নিয়ে ভাববেন, দেরিতে হলেও আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন। তাহলে আমরা আরও শক্তি পাব।

কাগজ : বিএনপি দীর্ঘদিন জামায়াতের সঙ্গে রয়েছে, জামায়াত ১৮ দলের শরিক। পঁচাত্তরের পর ইনডেমনিটি দিয়ে ‘ দালাল আইন ’ বাতিল করে বিএনপি জামায়াতের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। তার পরও কেন আপনার মনে হলো যে, বিএনপি যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে বা জামায়াত নিষিদ্ধ করার এই আন্দোলনে এক হবে, সংহতি প্রকাশ করবে আপনাদের সঙ্গে ?

ডা. ইমরান : আমি জানি না, আমাদের ভাবনা ভুলও হতে পারে। একাত্তরের বীরাঙ্গনা খালেদা জিয়ার দল বিএনপি অতীতে যা-ই করুক, এখন অন্তত বিএনপি জামায়াতকে ছেড়ে চলে আসবে তরুণদের এই মঞ্চে, দেশের মানুষের এই গণজাগরণে হয়তো সম্পৃক্ত হবে- আমরা এটাই ভেবেছিলাম। শুরুর দিকে বিএনপি তেমন কিছু বলেনি। পরবর্তীকালে বিএনপির নানাজন নানা রকম মন্তব্য করছে। আমি বা আমরা ঠিক মেলাতেও পারছি না।  হয়তো খালেদা জিয়াকে কেউ কেউ বিভ্রান্ত করে থাকতে পারে। তবে উনি যদি একটু আমাদের পাশে থাকতেন, আরও অনেক বেশি শক্তি পেতাম আমরা।

কাগজ : এই আন্দোলন চলাকালীন খালেদা জিয়া কিন্তু জামায়াতের হরতালকে সমর্থন করেছেন। আন্দোলনকে ‘ উসকানিমূলক ও বেআইনি ’ বলেছেন…তার পরও কি আপনি আশা করছেন…

ডা. ইমরান : হ্যাঁ, আমি এখনো আশাবাদী। খালেদা জিয়া নিজে একাত্তরের বীরাঙ্গনা। অনেক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা তাদের দলে রয়েছে, এটা তাদেরই দাবি। আমি এখনো মনে করি, উনি সকল বিভ্রান্তি এড়িয়ে, এই গণজাগরণের সঙ্গে একাত্ম হবেন। জনগণের মুক্তির মিছিলে, রাজাকারদের বিরুদ্ধে তিনিও দাঁড়াবেন। জামায়াতের হরতাল শুধু নয়, জামায়াতকে তিনিও বর্জন করবেন।

কাগজ : বিভিন্ন জায়গা থেকে বলা হচ্ছে, এই আন্দোলন ‘ ব্যাকড বাই আওয়ামী লীগ ’ অর্থাৎ ‘ সরকারের সমর্থনে এই আন্দোলন ’- এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

ডা. ইমরান : আপনি নিশ্চয়ই শুরু থেকে লক্ষ  করেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দই কিন্তু এখানে এসে বেশি নাজেহাল হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। আওয়ামী লীগ নিজে নিশ্চয়ই বিব্রত হতে চাইবে না নিজের কাছে । তারপর এখানে যে ছাত্রসংগঠনগুলো কাজ করছে, তাদের বেশির ভাগই কিন্তু আওয়ামী রাজনীতির নয়, বরং আওয়ামী লীগের বিরোধী । দাবি আদায়ের আন্দোলন নিয়ে যে বলা হচ্ছে, এটা সরকার-সমর্থিত, তা একেবারে অমূলক। দাবি আদায়ের এই আন্দোলন তো সরকারের বিরুদ্ধে। এই দাবি পূরণ করবে কে- সরকার । সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, সরকার-সমর্থিত আন্দোলন এটা।
যদি বলার কথা থাকে তবে একটা জায়গায় থাকতে পারে যে, পুলিশ কেন আমাদের পিটিয়ে তুলে দিচ্ছে না বা দেয়নি। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে দেখবেন, বিরোধী দলও যখন আন্দোলন করে তখন সরকারের পক্ষ থেকে কিন্তু ঘা মেরে রাস্তা থেকে তুলে দেওয়া হয় না । হয় কখন? যখন সেখান থেকে কোনো সহিংসতা করা হয়, ভাঙচুর করা হয়, নাশকতা করা হয় । আমরা শুরু থেকেই একটা বিষয়ে খুবই সতর্ক ছিলাম সেটা হলো, এমন কিছু আমরা কেউ করব না, যাতে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসতে পারে । আমরা কোনো ঢিলও ছুড়িনি । পুলিশকেও মারিনি। আমরা কেবল আমাদের মতো প্রতিবাদ করেছি। সরকার বরং আমাদের নিয়ে বিপদে পড়েছে, আমাদের তুলে দিতেও পারছে না। আবার এই গণদাবির বিরোধিতা করারও সুযোগ নেই আওয়ামী লীগের ।

কাগজ : বলা হচ্ছে আপনি ব্লগার নন…

ডা. ইমরান : এখানে কিন্তু একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার যে, আমি মূলত সামাজিক সংগঠন করি । আমাদের যে সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন তা হলো ‘ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্ক’। এর সদস্য যারা তারা সবাই কমবেশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সঙ্গেও আছে । আমি কিন্তু মূলত অর্গানাইজার, এই সংগঠনের আহ্বায়ক। এটা কিন্তু ব্লগ নয় । শুধু ব্লগারদের প্লাটফর্ম যে এটা,  তা-ও কিন্তু নয় । অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদেরও এটা প্লাটফর্ম।
আবার আমাদের নিজেদেরও একটা ব্লগ আছে। সেটার চিফ মডারেটর আমি নিজে। দেড়-দুই বছর ধরে এটা রান করছে। সর্বশেষ ব্লগ জনপ্রিয়তার যে জরিপ, সেটাতে দ্বিতীয় হয়েছে যে ব্লগ হয়েছে, তার চেয়ে চার গুণ বেশি পেয়ে প্রথম হয়েছে আমাদের এই ব্লগটা। আমি চার বছর ধরে ব্লগ করি। অনেকের ব্লগের পোস্ট হয়তো আমার চেয়ে বেশি। এখানে মাপকাঠি কিন্তু ব্লগ কে বেশি লিখেছে তা নয় । এটা একটা প্লাটফর্ম। এখানে অনেক বড় বড় ব্লগার আছে, যাদের পোস্ট হয়তো আমার চেয়ে এক শ গুণ বেশি । যেমন ধরেন আরিফ জেবতিক, সবাক পাখি, স্বপ্নকথক, মারুফ রসুল, আজাদ মাস্টার- এরা অসম্ভব জনপ্রিয় ব্লগার। এরা প্রজন্ম ব্লগের অ্যাকটিভ মেম্বার। কিন্তু আমার পরিচয় মূলত অর্গানাইজার।  সুতরাং এখানে ভুল ব্যাখ্যার কোনো সুযোগ নেই।

কাগজ : বলা হচ্ছে যে, দেশ চালাচ্ছেন কে? ‘ শেখ হাসিনা ’ নাকি ‘ ডা. ইমরান ’ ? দেশ নাকি চালাচ্ছে প্রজন্ম চত্বর বা শাহবাগ…

ডা. ইমরান : দেশ আসলে শাহবাগই চালাচ্ছে । ডা. ইমরান মানে তো প্রজন্ম  চত্বর । জনজাগরণ। জনমানুষ। জনমানুষই তো দেশ চালায় ।  জনমানুষ ভোট দেয়। সরকার বানায়। বিরোধী দল বানায়। জনমানুষই তো শক্তিশালী। জনমানুষই তো শাহবাগের প্রাণ।

কাগজ : অভিযোগ তোলা হচ্ছে, আপনি জনগণকে ‘ নির্দেশ ’ দিচ্ছেন। আপনি এভাবে ‘ নির্দেশ ’ দিতে পারেন কি না ? আপনার কী মনে হয়…

ডা. ইমরান : আমাদের কর্মসূচিগুলো সকলের সমবেত সিদ্ধান্ত। সেটার আহ্বায়ক হিসেবে আমি পড়ে শোনাই, কিংবা ঘোষণা করি। এই অহিংস আন্দোলন থেকে আমরা আহ্বান করি, প্রতিবাদ করি, দাবি জানাই। সেটা নির্দেশ কখনোই নয়, দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বানটাই তুলে ধরি। যারা এই ‘ আহ্বান ’কে ‘ নির্দেশ ’ বলে মনে করছেন, তারা আসলে ভুল বুঝছেন।

কাগজ : এই গণজাগরণকে ধরে রাখার জন্য সাধারণ মানুষ ছাড়াও প্রত্যক্ষ -পরোক্ষভাবে কাদের সহযোগিতা পেয়েছেন?

ডা. ইমরান : বড় বড় রাজনৈতিক দলের সুযোগও ছিল না নিজেদের ব্যানার নিয়ে এখানে আসার । সেটা আমরা শুরুতেই বলেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যানারে আছে, সামাজিক সংগঠন, যুব সংগঠন যারা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে, বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠন, নারী সংগঠন সবাই কিন্তু এখানে এসেছে । জামায়াত-শিবির ও তাদের অঙ্গসংগঠন ছাড়া সব ছাত্রসংগঠনই কিন্তু এসেছে কমবেশি। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক বা আদর্শিক পার্থক্য থাকার পরও তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে অবস্থানের এই জায়গাটিতে সকলে এক হয়েছে।

কাগজ : দৈনিক আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে আপনারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?

ডা. ইমরান : আমরা সরকারকে সব তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি, মাহমুদুর রহমান বা আমার দেশ কী করছে। তারা মিথ্যা প্রচারণা, কুরুচিপূর্ণ প্রচারণা করছে। মাহমুদুর রহমান সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে উসকে দিচ্ছেন, দিয়েছেন। প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্টে কিন্তু মামলাও হতে পারে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে সরকারকে।
আমাদের আন্দোলন কিন্তু অহিংস আন্দোলন। আমরা কোনো সহিংসতায় যাইনি, আমরা সেপথে যাবও না। মিথ্যা তথ্য, খবর প্রকাশ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস উসকে দেবার প্রমাণ সরকারের কাছে রয়েছে। তার পরও সরকার যদি মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার না করে, সেটা দুঃখজনক। এটা সরকারের ব্যর্থতাও।

কাগজ : আপনারা ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা, মিশন গ্রুপ, কেয়ারী গ্রুপ, ক্রিসেন্ট রিয়েল এস্টেটসহ এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জামায়াত সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছেন। এগুলোতে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততা আছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো তো একই সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামায়াতমুক্তকরণের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো সাজেশন রয়েছে কি?

ডা. ইমরান : একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, জামায়াতের ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা, মেট্রো বা মিশন- সাধারণ মানুষ কিন্তু এদের বর্জন করা শুরু করেছে। এটি অনেক বড় সামাজিক অর্জন। আপনাদের সাপ্তাহিক কাগজ ঘোষণা দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বিজ্ঞাপন বর্জন করেছে। এটাও কিন্তু কম বড় অর্জন নয়। আবার একই সময়ে অনেক গণমাধ্যম ইসলামী ব্যাংকের এমডি মান্নান সাহেবের ইন্টারভিউ প্রকাশ করছে, বেশি টাকায় বিজ্ঞাপন ছাপছে। এসব নানা কিছুই হচ্ছে। এখন সবাই সবকিছু বোঝে। এখন চাইলেও তাদের আর পুনর্বাসিত করা সম্ভব না। যারা এই সময়ের সুযোগ নিচ্ছে, তারাও ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে চলে যাবে। আমাদের ৬ দফা দাবির মধ্যে এটাও ছিল যে, জামায়াতের প্রতিষ্ঠান বা মদদদাতা বা জঙ্গি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় কমিশনের আওতায় এনে এদের তদন্ত করে, যারা জামায়াতকে অর্থায়ন করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার মনে হয় যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে, তখন যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাদের ব্যাপারেও একটা সমাধান আসবে।

কাগজ : এই মুহূর্তে প্রচুর সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধী শক্তি দেশজুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে। আপনাদের কাছে থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য আপনাদের পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে…

ডা. ইমরান : দেখুন, আজকে এই আন্দোলনকে দ্বিতীয় প্রজম্মের মুক্তিযুদ্ধ বলা হচ্ছে। জামায়াত ’৭১-এ যা করেছিল, এখনো ঠিক তাই করছে। কোনো পার্থক্য নেই সেই সময়ে-এই সময়ে । তখনো ধর্মকে পুঁজি করা, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা- এসব হয়েছে । এখনো তাই হচ্ছে। এখন অনেক মিডিয়া, মানুষ জানতে পারছে সবকিছু। যারাই প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের পে কথা বলে, তারা তাদের আক্রমণ করছে। তারা বাংলাদেশকে আক্রমণ করছে। তারা মসজিদ, মন্দির, দেবালয় কিছু বাদ দিচ্ছে না। সেই ’৭১-এর চরিত্র । মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ- সবই পুরোনো কায়দায় করছে। ধর্ষণের অভিযোগও আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। আমরা বিভিন্ন সময় সেটা বলে আসছি, আমরা সবাই বাঙালি, আমরা আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ প্রতিহত করব। প্রতিটা পাড়ায়, মহল্লায় আসুন আমরা জেগে উঠি, প্রতিরোধ করি। গির্জা, মন্দির যে পোড়াচ্ছে কেবল তা নয়, মসজিদেও হামলা করছে তারা। তাই মসজিদও পাহারা দিতে হবে।  কারণ, মসজিদে আগুন দিয়ে তারা বলবে হিন্দু ভাইরা আগুন দিয়েছে। বিভ্রান্তি ছড়াবে।  সুতরাং আমাদের পাড়ায় পাড়ায়, এলাকায় এলাকায় পাহারা দিতে হবে। সজাগ হতে হবে, যাতে তারা নৈরাজ্য করতে না পারে।
আরেকটা বিষয়, এটা যেহেতু দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ বলা হচ্ছে, আজকে এই ৪২ বছর পর এসে কারা হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ করছে তাদের চিনে রাখুন, চিহ্নিত করুন। তাদেরও শাস্তি আমরা নিশ্চিত করব। বিচার করব।কাগজ : কত বছর পর ?

ডা. ইমরান : কত বছর পর কেন, আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিচার করব। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছি, আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরে যাব।

কাগজ : যুদ্ধাপরাধী কিন্তু আওয়ামী লীগেও আছে, তাদের বিচার আপনারা চাইছেন কি না…

ডা. ইমরান : এটা অসম্ভব ভুল, এই দলের যুদ্ধাপরাধী বিচার চাইব, ওই দলের চাইব না- এসব তো প্রশ্নই ওঠে না। দল তো আমাদের কাছে কোনো আলোচনার বিষয়ই নয়। সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাইছি আমরা। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কোনো বিষয় না । কে দল, কে লীগ, কে সরকার, কে বেসরকার- এসব আলোচনার বিষয়ই না । এটা বারবার বলছি, চিৎকার করছি, রাজপথে পড়ে আছি এই এক দাবি নিয়ে ।  দল তার পরিচয় না, তার পরিচয় সে যুদ্ধাপরাধী।

কাগজ : একটা কৌতূহল মানুষের মধ্যে তীব্র। আপনাকে আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে দেখা যাবে কি না ? খুব সহজভাবে যদি বলি আপনি রাজনীতিতে আসবেন কি না ?

ডা. ইমরান : আমরা কিন্তু একটা টিমওয়ার্ক করছি, আমি একা না । এই মুহূর্তে আমরা এ ধরনের চিন্তাও কেউ করছি না । আমার রাজনীতিতে আসার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা মানুষের সঙ্গে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছি, সেভাবেই কাজ করে যেতে চাই।

কাগজ : নতুন কোনো রাজনৈতিক দল এখান থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে কি?

ডা. ইমরান : দলীয় রাজনীতিতে যাবার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এখন পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তাতে দলীয় রাজনীতিতে যাবার সম্ভাবনা আমার এবং আমাদের নেই।

কাগজ : আপনারা পরবর্তীকালে দুর্নীতি, অনিয়ম এসব বিষয়েও সোচ্চার হবেন কি না, এটাও জানবার বিষয়।

ডা. ইমরান : আমরা ৬ দফা দিয়েছি। আমাদের মূল দাবি যুদ্ধাপরাধীর বিচার, সর্বোচ্চ শাস্তি । জাতির সবচেয়ে হতাশার যে জায়গাটা, গ্লানির যে জায়গাটা সেটা আমরা মেরামত করতে চাই। পরবর্তী সময়ে দেখবেন একটা প্রতিবাদী প্লাটফর্ম তৈরি হয়ে গেছে। এখন আর চাইলেও যে কেউ যেকোনো কিছু করতে পারবে না। দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যেকোনো বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণেরা ভূমিকা রাখবে।

কাগজ : এই আন্দোলনের প্রাথমিক বিষয় অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে। আন্দোলন কত দিন চলবে?

ডা. ইমরান : এই আন্দোলন তত দিনই চলবে যত দিন বাংলাদেশে সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হবে। তত দিনই চলবে যত দিন যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না হবে। যত দ্রুত সম্ভব জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকারকে দৃঢ়ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং তা কার্যকর করতে হবে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানও আর তাদের টাকা দিতে পারবে না। তখন আপনি বলতে পারবেন, অবৈধ সংগঠনকে টাকা দিচ্ছেন বা সহযোগিতা করছেন কেন? জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করলে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে- এমনটাও আমরা মনে করি না। আপনি দেখবেন, কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনই এখানে মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারেনি। জামায়াত-শিবিরও পারবে না। জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার এখনই সময় আমি বলব।

কাগজ : আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে যদি বলেন আমাদের। পাঠকদের তীব্র কৌতূহল আপনার সম্পর্কে…

ডা. ইমরান : ৫ তারিখের আগেও তো আমাকে আপনারা চিনতেন না। যে সাধারণ মানুষদের আপনারা চেনেন না, ১৬ কোটি মানুষ, আমি সেই মানুষদের একজন। ব্যক্তিজীবনে আমি একজন চিকিৎসক। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছি। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বিভিন্ন সময় ছিলাম। ছাত্রদের নিয়ে, যুবদের নিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করেছি। সে সংগঠনটা নিয়ে আমি বেশি কাজ করেছি তা হলো ‘ ইয়ুথ ফর পিস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’। তরুণদের রাজনীতি-সচেতন করে তোলা, আগ্রহী করে তোলা, লিডারশিপ ম্যানেজমেন্ট, কমপ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট এই বিষয়গুলোকে পাঠদান করা। যে তরুণেরা ফেসবুকে বলছে ‘ We hate politics’  তাদের মোটিভেটেড করা।

কাগজ : বলা হচ্ছে আপনি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন…

ডা. ইমরান : আমি যখন রংপুর মেডিকেলে পড়ি তখন ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম। পরে অবশ্য আর ছিলাম না। যখন ইন্টার্নি করি বা পাস করে যাই, তখন থেকে আর কোনো দলীয় ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে ছিলাম না। এই বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া উচিত। আরেকটা বিভ্রান্তিও ছড়ানো হয় যে, আমি চিকিৎসকদের কোনো সংগঠন কিংবা স্বাচিপে ছিলাম এমন কিছু প্রচার দেওয়া হচ্ছে। আসলে তা মোটেও নয়। আমি কোনো নেতা তো নই-ই, সাধারণ সদস্যও না। ইন্টার্নি ডাক্তার যখন ছিলাম তখন ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনেরও সভাপতি ছিলাম। সেটাও পুরোপুরি অরাজনৈতিক সংগঠন। সবশেষে ওয়াইপিডি যেটার কথা বললাম, সেটা আমিই প্রতিষ্ঠিত করি। দুই-আড়াই বছর আগে সেটা নিয়েই আমি কাজ করছিলাম। আমাদের একটা রেসকিউ টিমও আছে। বাংলাদেশের যেখানেই কমিউনাল অ্যাটাক হয়, সেখানেই আপনাদের টিম পৌঁছে যায়। রামুর ঘটনা আপনারা দেখেছেন, রামুর ঘটনায় তখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক নেতা পৌঁছেওনি, যখন আমরা ১২ জন ওয়াইপিডি থেকে পৌঁছে যাই। চার-পাঁচ দিন থাকি। বাঙালি মুসলমানদের সঙ্গে বৌদ্ধদের যে অবিশ্বাস তৈরি হলো সেখানে কাজ করা, ত্রাণ কার্যক্রম করা- এই কাজগুলো আমরা করেছি। এটা এনজিও না, একেবারেই অনলাইনভিত্তিক তরুণদের সংগঠন।

কাগজ : আপনার কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ?

ডা. ইমরান : আমি ওয়াইপিডির কার্যক্রম করতে গিয়েই চরাঞ্চলে যাই। বেশ কিছু চরাঞ্চলে আমরা কাজ করেছি। কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, চরাঞ্চলে প্রচুর মাদ্রাসা আছে কিন্তু স্কুল নেই। আলোকিত দ্বীপ নামে চরাঞ্চলে একটা স্কুল শুরু করেছি। নিঝুম দ্বীপে সেটার কাজও চলছে। জায়গাও চরের মানুষের দেওয়া। আমরা কেবল লোক পাঠিয়ে পরিচালনা করি। আমরা চাই চরগুলো আলোকিত চর হোক, অন্ধকার দূর হোক।

কৃতজ্ঞতায় : সাপ্তাহিক কাগজ

© 2013 – 2021, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button